রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বিশ্বাস করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেলা কারাগারের জেল সুপার।
২০১৯ সালের ২৬ জুনের আলোচিত ওই ঘটনায় দায়ের মামলায় গত বুধবার মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত; খালাস পেয়েছেন চারজন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। মিন্নিকে রাখা হয়েছে একটি কনডেম সেলে। বাকিরা আছেন আরেকটিতে। জেলা কারাগারের কনডেম সেলে মিন্নিই একমাত্র নারী কয়েদি।
জেল সুপার আনোয়ার হোসেন শুক্রবার দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, মিন্নি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। নিজের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে বিশ্বাসই করতে পারছেন না তিনি।
জেল সুপার বলেন, সাধারণত মৃত্যুদণ্ডদেশপ্রাপ্তদের জন্য আলাদা কক্ষ, পোশাক ও বিছানার ব্যবস্থা থাকলেও সাধারণ বন্দিদের মতোই দণ্ডিতদের খাবার দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাতে মিন্নিসহ ছয় আসামিরই খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, গরুর মাংস ও ডাল। সকালে তাদের রুটি ও ডাল দেওয়া হয়েছে।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
মিন্নিকে নির্দোষ দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে কুচক্রিমহলের ষড়যন্ত্রে ফাঁসানো হয়েছে। নির্যাতন করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। আমরা বিষয়গুলো উচ্চ আদালতে তুলে ধরবো। আমি নিশ্চিত আমার মেয়ে নির্দোষ, উচ্চ আদালত থেকে সে খালাস পাবে।’
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে হাসপাতালে মারা যান তিনি। এই ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ালে তোলপাড় হয় দেশ জুড়ে।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা ১২ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী রাখা হয়। তবে তদন্তে তারও সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ ও কিশোর ১৪ জনের আলাদা বিচার শুরু হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের অভিযোগপত্রে মিন্নিকে ৭ নম্বর আসামি রাখা হয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনসহ ৪৩ কার্যদিবসে বিচার শেষ হয়।