দুই বছর আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাস চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে আরও ২০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
গ্রিনলাইনকে তিন মাসের মধ্যে এই ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। রায়ে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এর আগে কয়েক দফায় তাকে ১৩ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ।
পা হারোনো রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে যে কোনো দিন রায় দেয়া হবে বলে গত ৫ মার্চ মামলাটি সিএভি (অপেক্ষমাণ) করে রাখে আদালত।
আদালতে গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হারুন অর রশিদ। রাসেল সরকারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রায়ের পরে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, গ্রিনলাইনকে নতুন করে আরও ২০ লাখ টাকা তিন মাসের মধ্যে রাসেলকে দিতে হবে। টাকা পরিশোধ করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এর আগে গ্রিনলাইন রাসেল সরকারকে ১৩ লাখ টাকা দিয়েছে। এখন নতুন করে আরও ২০ লাখ টাকা দিতে হবে। এ রায় দুইপক্ষের সমঝোতার মাধ্যমেই হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে গ্রিনলাইন আপিল করবে না বলে তিনি জানান।
২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীতে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের ধাক্কায় প্রাইভেটকার চালক গাইবান্ধার রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ঘটনায় গাইবান্ধার একই এলাকার বাসিন্দা জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য (বর্তমানে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক) আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি রিট আবেদন করেন।
এ আবেদনে হাইকোর্ট ওই বছরের ১৪ মে রুল জারি করে। রুলে কেন রাসেলকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়।
পরে হাইকোর্ট এক আদেশে রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়। এতে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা করে দিতে বলা হয়। এরপর কয়েক দফায় ১৩ লাখ টাকা দেয় গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ।
পরে গ্রিনলাইনের আবেদনে গত বছরের ১৩ অক্টোবর রাসেল সরকারকে টাকা (পরিশোধের অর্থ বাদ যাবে) দেয়ার আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগ।
পরিশোধের অর্থ বাদ দেয়ার পর বাকি যা থাকবে তার ওপর হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ ছিল। হাইকোর্টে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হলো।