করোনার চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠা মো. সাহেদ করিমকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
সাহেদ ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান।
সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালত এই রায় দেন।
আদালতে উপস্থিত সাহেদ রায় শুনে অনেকটাই নিবির্কার ছিলেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান। আসামির আইনজীবী মো.মনিরুজ্জামান বলেছেন, তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
অবশ্য রায় ঘোষণার পর সাহেদকে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নেয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সুবিচার পাই নাই। উচ্চ আদালতে যাব। উচ্চ আদালতে সুবিচার পাব।’
আপনি কি এটার সঙ্গে জড়িত, প্রশ্ন করলে সাহেদ বলেন, ‘আমি এটার সঙ্গে জড়িত না।’
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘আমাদের সমাজে সাহেদের মতো ভদ্রবেশে অনেক লোক রয়েছে, যা এই মামলার দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে।
৮ কার্যদিবসে শেষ হয়েছে মামলার বিচার কাজ। আসামিপক্ষের আইনজীবী এই সময়কে অস্বাভাবিক বলেছেন সাহেদের আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘অস্বাভাবিক তাড়াহুড়োর মধ্যে রায় হয়েছে। কিছু ভেবে ডিফেন্স লাইন ভালোভাবে তৈরির সুযোগ পেলাম না।’
৬ জুলাই রাজধানী উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির দেখতে পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনকে আসমি করে উত্তরা-পশ্চিম থানায় মামলা হয়।
গ্রেফতারের পর সাহেদকে সাতক্ষীরা থেকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। ফাইল ছবি
সাহেদকে ধরতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে থাকার সময় ১৮ জুলাই তাকে নিয়ে অভিযান চালালে গাড়ি থেকে অস্ত্র ও মাদক পায় উদ্ধার হয়। তখন অস্ত্র আইনে উত্তরা-পশ্চিম থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়। ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত।
সাহেদ গত ১৬ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। যে অস্ত্রের কথা মামলায় বলা হয়েছে, সেটা তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়নি বলে আদালতকে বলেন সাহেদ।
২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
সেই মামলায় আদালত সোমবার তার এই কারাদণ্ডের আদেশ দিল। সাহেদের বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি মামলার সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবী।