বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রয়াণ

  • জব্বার খান, ঢাকা   
  • ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ২২:১৩

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই।

রোববার রাত ৭টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেলের ছেলে সাংবাদিক সুমন মাহবুব।

সুমন জানান, জ্বর অনুভব হওয়ার পর ৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হাসপাতালে ভর্তি হন তার বাবা। ৪ সেপ্টেম্বর তার শরীরে করোনা ধরা পড়ে। ১৮ সেপ্টেম্বর তার করোনা নেগেটিভ আসে। ২২ সেপ্টেম্বর ফের করোনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি।

মাহবুবে আলমের স্ত্রী বিনতা মাহবুব একজন চিত্রশিল্পী। তাদের দুই সন্তানের একজন সুমন মাহবুব। অন্যজন শিশির কনা।

অ্যাটর্নি জেনারেলের মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা শোকবার্তা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহ পর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম।

এরপর থেকে প্রায় এক যুগ ধরে তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে পাঁচ বছর পূর্ণ করেন মাহবুবে আলম। এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে স্বপদে তাকে বহাল রাখা হয়।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এত দীর্ঘ মেয়াদের আর কোনো অ্যাটর্নি জেনারেল দেখা যায়নি। এর আগে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৫ নভেম্বর ১৯৯৮ থেকে ৪ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

মাহবুবে আলমের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মৌছামান্দা গ্রামে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) ও পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে এমএ পাস করেন। 

১৯৭৯ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবিধান ও সংসদীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিপিএস) থেকে সাংবিধানিক আইন এবং সংসদীয় প্রতিষ্ঠান ও পদ্ধতিতে দুটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

মাহবুবে আলম আইনে স্নাতক সম্পন্নের পর ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে অনুশীলন শুরু করেন। ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হন তিনি। 

১৯৯৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। 

২০০৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন মাহবুবে আলম। ২০০৫-২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। 

এর আগে ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মামলায় আইনজীবী হিসেবে যুক্ত থাকা মাহবুবে আলম সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম, ১৩তম ও ষোড়শ সংশোধনী মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন।

এ ছাড়া তিনি বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলাসহ সর্বোচ্চ আদালতে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার মতো ঐতিহাসিক অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করেছেন।

শোকবার্তা

অ্যাটর্নি জেনারেলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আলাদা শোকবার্তায় তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মাহবুবে আলমের  মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

শোকবার্তায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় মাহবুবে আলমের অবদান অনস্বীকার্য।

অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে দীর্ঘ ২৮ বছরের সুসম্পর্ক ছিল বলেও জানান প্রধান বিচারপতি। 

অন্যদিকে এক শোকবার্তায় আইনমন্ত্রী বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে চিনেন ও জানেন। তারা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাসহ অনেক মামলা একসঙ্গে পরিচালনা করেছেন। 

তিনি আরও বলেন, মাহবুবে আলম নিজ কর্মগুণেই দেশের মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার মৃত্যুতে দেশের আইন অঙ্গনে এক বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো।

শোক জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ তার শোকবার্তায় বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে মাহবুবে আলম অত্যন্ত নিষ্ঠা ও যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী এই ব্যক্তি কোনোদিন অন্যায় ও অসত্যের সাথে আপস করেননি।

সাংবাদিকদের সংগঠন ল' রিপোর্টার্স ফোরামসহ আরও বেশ কিছু সংগঠন মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে।

 

এ বিভাগের আরো খবর