গ্যাসের চাপ বাড়াতে নিচতলার একটি কক্ষে বসানো হয়েছিল কম্প্রেসার। সংযোগ লাইনে ত্রুটি থাকার কথা বাড়ির মালিক মাসুদ মিয়াকে জানান ভাড়াটিয়ারা। কিন্তু তাদের শঙ্কার কথা আমলে নেননি তিনি। প্রাণ দিয়ে যার খেসারত দিতে হলে দুজনকে। দগ্ধ অপর একজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
মঙ্গলবার সাভারের হেমায়েতপুরে মোল্লা পাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জের ফরিদ আহমেদ ও কুষ্টিয়ার হৃদয়। এ ঘটনার পর পরিবারসহ পলাতক রয়েছেন বাড়ির মালিক মাসুদ। পেশায় টাইলস মিস্ত্রী ঐ যুবকরা হেমায়েতপুরের বাড়িটিতে ভাড়াটিয়া ছিলেন। তিন তলা বাড়িটির নিচতলার একটি ঘরে থাকতেন তারা।
বিস্ফোরণের পরে এলাকাটিতে অভিযান শুরু করে তিতাস। জানা গেল, মাসুদের বাড়ির গ্যাসের সংযোগটিও অবৈধ ছিল।
নিহত ফরিদের বোন রিক্তা আক্তার জানান, ভাইয়ের আহত হওয়ার খবর শুনে ঘটনার পরদিন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছান। সেখানে তিনি ফরিদের সাথে কথা বলতে না পেরে হাবিবুরের সাথে কথা বলেন।
হাবিবুর রিক্তাকে বলেন, ঘরের ভেতরে গ্যাসের লাইন থাকা নিয়ে তারা অনেকবার আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাদের নিজেদেরও শঙ্কা ছিল দুর্ঘটনার। কিন্তু কথা আমলে নেননি বাড়িওয়ালা।
রিক্তাকে হাবিবুর জানান, অন্যান্য দিনের মত তারা মঙ্গলবার রাতে কাজ থেকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রাত তিনটার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। তখন ঘরে থাকা হাবিবুররা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
আহতদেরকে উদ্ধার করার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিবেশী রাসেল। তিনি বলেন,'অনেক জোরে আওয়াজ শুনে ঘটনাস্থলে আসি। ঘরটিতে তখন আগুন ধরে গেছে। হাবিবুররা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন। আগুনের ভেতর থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।'
সে সময় আহতরা জানান, গ্যাসের লাইন থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে।
তিতাসের সাভার অঞ্চলের ডিজিএম আবদুল মান্নান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তারা কম্প্রেসার থাকার ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়েছেন। গ্যাসের লাইন ও কম্প্রেসর দুটিই অবৈধ হওয়ায় গ্যাসের চাপ নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় ছিল না। কম্প্রেসারের ত্রুটির কারণেই এটি বিস্ফোরিত হয়ে থাকতে পারে। আগুনের সূত্রপাতও হয়ত সেখান থেকেই। সাভার মডেল থানার উপ পরিদর্শক সুজন শিকদার জানান, গ্যাস সংযোগ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন অগ্নিদগ্ধরা।
এ ঘটনায় সাভার মডেল থাকায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহত ফরিদের বোন রিক্তা আক্তার। প্রধান আসামী করা হয়েছে বাড়ির মালিক মাসুদ মিয়াকে।
সাভার ট্যানাড়ি ফাঁড়ির পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম মামলা হওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন।