বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার অনলাইনে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দিলেও কীভাবে তা করা হবে, সে বিষয়ে ধারণা নেই বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির।
কবে নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হবে, তাও বলতে পারছে না সংস্থাটি। কাদের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে, সে বিষয়ে আলোচনাই এখনও হয়নি।
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা আসার পর দেশে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে দাম। ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হিসেবে রবিবার থেকে ট্রাকে করে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে পণ্যটি। একজন কিনতে পারছেন সর্বোচ্চ দুই কেজি।
তবে সনাতন পদ্ধতিতে বিক্রির এই কার্যক্রমে খুব বেশি মানুষ উপকৃত হচ্ছে না। ট্রাকের সামনে সারিতে দীর্ঘ অপেক্ষা করে দুই কেজি পেঁয়াজ কেনার মতো সময়-সুযোগ থাকে না নগরবাসীর। আবার ট্রাকের সংখ্যাও সীমিত। এর মধ্যে বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অনলাইনে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দেন।
তবে এই বিক্রির কাজটি যারা তদারকি করবে, সেই টিসিবির কোনো ধারণা নেই কবে থেকে, কোন প্রক্রিয়ায়, কার কাছে কত পরিমাণ পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে; কীভাবে সরবরাহ দেওয়া হবে, ডেলিভারি চার্জ কত হবে।
মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেছিলেন, 'জনবল সংকটে টিসিবি একাই এসব পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবে না। তাই আমরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে পেঁয়াজ বিক্রি করব।'
মন্ত্রীর ঘোষণার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর একই মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বকসী নিউজবাংলাকে বলেন, 'অনলাইনে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়টা নিয়ে শুধু ভাবা হয়েছে। কবে থেকে শুরু হবে বা এর প্রসেসিংটা কী, সে বিষয়ে যখন সিদ্ধান্ত হবে তখন জানানো যাবে, এর আগে না।'
টিসিবির আঞ্চলিক কর্মকর্তা (ঢাকা) মিশকাতুল আলমও অনলাইনে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারেননি। -কবে থেকে এই কার্যক্রম বিক্রি শুরু হবে?
-এ বিষয়ে বিস্তারিত এখনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। আপনারা পরবর্তীতে জানতে পারবেন।
-মন্ত্রী বলেছেন, ই কমার্স সাইটের মাধ্যমে এই পেঁয়াজ বিক্রি হবে। কোন কোন ক্রাইটেরিয়ায় ই কমার্স প্রতিষ্ঠান এই ডিলারশিপ পেতে পারে?
-জাস্ট অনলাইনে ই-কমার্সে বিক্রির বিষয়টি নিয়ে সরকার ভাবছে। তবে এটার কার্যকরী এবং বিস্তারিত আলাপ আলোচনা আমরা এখনো করিনি। করলে এ বিষয়ে বিস্তারিত আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
টিসিবির ট্রাকগুলোতে এদিন সকাল থেকেই আগের চার দিনের মতোই ভিড় দেখা গেছে। তবে সেখানে বিড়ম্বনায় ক্রেতারা বিকল্প উপায়ে বিক্রির অনুরোধও করেছেন।
বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত সোয়াইব রহমান বলেন, ‘এই কার্যক্রম (অনলাইনে বিক্রি) হলে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ভোগান্তি কমবে আমাদের, সময় বাঁচবে।’
'অনেক সময় দীর্ঘ লাইন পার হয়েও দেখা যায় পেঁয়াজ নিয়ে ঘরে ফেরা যায় না। চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে না৷ যে ধরুন দুই তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, ট্রাকের কাছে পৌঁছাতেই শুনে শেষ হয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনলাইনে কেনা গেলে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকবে’, বলেন স্কুলশিক্ষিকা রোকসানা হক।
একদিনের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম অবশ্য কিছুটা কমেছে। আগের দিন ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুরে বিভিন্ন দোকানে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা করে দাম রাখতে দেখা গেছে।
রাজধানীতে পেঁয়াজের আড়ত শ্যামবাজারের একজন দোকানি জানিয়েছেন, আজ তাদের এখানে দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল কেজি প্রতি ৬০ টাকা।