পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে ইলিশ পাচ্ছে বরিশালবাসী। স্বভাবতই রূপালী মাছপ্রেমীরা ভীষণ খুশি।
শনিবার বরিশালের নগরীর পোর্টরোডে ইলিশ মোকামে এক কেজি ওজনের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায়। এ হিসেবে প্রতিকেজি ইলিশের দাম পড়েছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকা। অপেক্ষাকৃত ছোট ইলিশের ক্ষেত্রে দাম আরও কম।
মোকামে মণপ্রতি দামের হিসাবে কেউ চাইলে এক কেজিও কিনতে পারেন। ফলে খুচরা কিনলেও তাকে বেশি টাকা দিতে হয় না।
এক দিনের ব্যবধানে হঠাৎ করেই মণ প্রতি দাম কমেছে ১০ থেকে ১৪ হাজার টাকা। হঠাৎ এই দরপতনে ক্রেতারা খুশি ভীষণ। যদিও জেলেদের মন ভার।
এগুলো সব সাগরে ধরা পড়া ইলিশ। জেলেরা জানান, সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ মাছ ধরা পড়েছে। আর সেগুলো বিক্রি করার জন্য বরিশালের মোকামে নিয়ে আসা হয়।
সরবরাহ প্রচুর হলেও স্থানীয় বাজারে এত চাহিদা নেই। আবার ভারতে পাচার বন্ধ। এই দুই মিলিয়ে দাম কমেছে বলে জানাচ্ছেন ইলিশ কেনাবেচায় জড়িতরা।
শুক্রবারও মোকামে এক কেজি ওজনের ইলিশের মণপ্রতি দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৬ হাজার টাকা। সেটি ১০ থেকে ১৪ হাজার টাকা কম দাম দেখে বিস্মিত হয়েছে বেপারিরা।
সকালে পাঁচ থেকে আটশ গ্রামের ইলিশের দাম ছিল আরও কম। প্রতিমণ ১৮ হাজার এবং খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা, যা আগের দিন ছিল কেজি প্রতি ছয়শ থেকে ৬৫০ টাকা।
২৫০ থেকে চারশ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের ইলিশ মণ প্রতি ১০ হাজার এবং কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকায়। দুই দিন আগেও মণ প্রতি দাম ছিল ১৪ হাজার টাকায়।
পোর্ট রোডের আড়তদার তালুকদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কবির হোসেন বলেন, ‘গত তিন চার দিন ধরেই মোকামে সাগরের ইলিশের আমদানি বেশি। তাই বিক্রি হয়েছে পানির দরে।‘
শুক্রবার মোকামে সর্বোচ্চ তিন হাজার মনের বেশি ইলিশ এসেছে যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। এই পরিস্থিতি ফ্রিজিং করার সুযোগ নেই।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘এখন ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। তার মধ্যে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা ১৭ থেকে ১৮ দিন সমুদ্রে যেতে পারেনি। এই সময়ের মধ্যে ইলিশ অনেক বড় হয়েছে।‘
‘মধ্যে ইলিশ ধরার দুটি জো (সময়ক্রম) ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় দুটি জোতেই ইলিশ শিকার হয়নি। এখন যখন জেলেরা যাচ্ছে সব ইলিশ একসাথে ধরা পড়ছে। তাই মোকামগুলোতে সরবরাহ বেড়েছে। কমেছে দামও।‘
‘তবে নদীর ইলিশ এখনও উঠতে শুরু করেনি। নদীর ইলিশের দামও বেশি।‘