বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা

  • প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ   
  • ১৭ আগস্ট, ২০২৪ ২১:২৪

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজাবে রহমত জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মসজিদের নয়টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ‌উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

দিনভর গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের আলোচিত মসজিদটিতে এই পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজাবে রহমত।

তিনি জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মসজিদের নয়টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ‌উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

জেলা শহরের ঐতিহাসিক এই মসজিদের নয়টি দানবাক্স তিন মাস পরপর খোলা হয়। এবার বাক্সগুলো খোলা হয়েছে প্রায় চার মাস পর।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমতের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূর-দুরান্ত থেকে।

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা শুভ ভূইয়া সিফাত জানান, টেলিভিশন, পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাগলা মসজিদের টাকা গণনা দেখে সরাসরি দেখার ইচ্ছে জাগে তার। সেই ইচ্ছে থেকে আজ দানবাক্স খোলা হয়েছে জেনে গণনা দেখতে এসেছেন তিনি। একসঙ্গে দানের এত টাকা দেখে খুব ভালো লেগেছে বলেও জানান তিনি।

টাকা গণনা কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ২৪৫ ছাত্র, ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।

এর আগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল চার মাস ১০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। তখন ২৭ বস্তায় দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। ঐতিহাসিক এই মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এত টাকা আগে পাওয়া যায়নি। এবার বস্তার সংখ্যা বাড়লেও কমেছে টাকার পরিমাণ।

মসজিদে নগদ টাকা ছাড়াও নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। দানবাক্সে টাকার সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান অলংকারও।

পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডিসি। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পৌরসভার মেয়র।

জেলা প্রশাসক জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।

মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়া জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে মসজিদে মুসল্লির চলাচল এবং নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকলেও দান অব্যাহত ছিল।

তিনি আরও জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়।

তা ছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এ দানের টাকা থেকে সহায়তা করা হয়েছে।

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করে থাকেন এ মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে। তাই এখানে দান করেন তারা।

জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে তিন একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর