সৌভাগ্যের বা মুক্তির রাত হিসেবে পরিচিত পবিত্র শবে বরাতে ইবাদত বন্দেগির জন্য রাজধানীর মসজিদে মসজিদে এখন মুসল্লিদের ভিড়।
রোববার মাগরিবের নামাজের পর থেকেই আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা আদায় করছেন নামাজ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনায় নফল ইবাদত-বন্দেগির মধ্যদিয়ে রাতটি অতিবাহিত করছেন।
রাজধানীসহ সারা দেশজুড়েই রাতভর মসজিদে প্রার্থনা করে সময় কাটানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন মুসল্লিরা। এ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা।
রাত জেগে ইবাদাত করবেন বলে ঠিক করেছেন মগবাজার নিবাসী সজিব তাওহীদ। তাই দূরে না গিয়ে বাড়ির পাশের মসিজদেই নামাজ আদায় করতে আসেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আজকের রাতে আল্লাহর দরবারে বেশি সময় থাকব। নিজের ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাইব।’
মাহে রমজান ও সৌভাগ্যের আগমনী বার্তা নিয়ে পবিত্র শবে বরাত সমাগত হয়। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এ রাতে মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজগারসহ বিভিন্ন ইবাদতে মশগুল হন।
হিজরি বর্ষের ১৪ শাবান রাতকে বলা হয় সৌভাগ্যের রজনী। বলা হয়ে থাকে, মহিমান্বিত এ রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন।
বাংলাদেশের আকাশে গত ১১ ফেব্রুয়ারি হিজরি শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়। পরদিন থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হয়। সে হিসাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে নির্ধারিত হয় পবিত্র শবে বরাত।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে মাগরিব ও এশার নামাজের পর এবং রাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদেও নেয়া হয়েছে প্রস্তুতি।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করে মোনাজাতে অংশ নিতে দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই এসেছেন। তাদের অনেককেই নিজের জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসতে দেখা গেছে।
অনেকে মসজিদ থেকে ফিরে নিজ বাসাতেও ইবাদাত বন্দেগিতে মশগুল হবেন। বিশেষ করে নারীরা আজকের রাতে বাসায় বসে আল্লাহর নৈকট্য লাভে ইবাদাতে অংশ নিচ্ছেন।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর ইবাদাত বন্দেগির মধ্য দিয়ে দিনটি পার হলেও, এদিন নানা উপাদেয় খাবার তৈরির এক ধরনের সংস্কৃতি চালু রয়েছে।
নানা স্বাদের মিষ্টান্ন, সেমাই, হালুয়া তৈরি করা হয়। এ নিয়ে পুরান ঢাকায় রীতিমত ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেন। যারা বাসা-বাড়িতে এসব তৈরি করতে পারেন না, তারা সেখান থেকে পছন্দের খাবার কিনে নিয়ে যান। এদিন বাড়িতে বাড়িতে ভালো খাবার তৈরিরও প্রচলন রয়েছে।