প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এর প্রভাবে কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার থেকে ৪১০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ তথ্য জানান কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান মো. ইমাম উদ্দীন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে কক্সবাজারে সাগর উত্তাল রয়েছে। সৈকতে সতর্কতামূলক লাল পতাকা টাঙানো উড়ছে। তারপরও সংকেত উপেক্ষা করে পর্যটকরা সমুদ্রে নামছেন। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচকর্মীরা মাইকিং করে সবাইকে সাগর থেকে উঠে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় লাইফগার্ড কর্মীরাও সতর্ক রয়েছেন।
সকালে দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি সভা করেছে জেলা প্রশাসন। সভায় জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ।’
আবহাওয়াবিদ মো. ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে উপকূলীয় এলাকা। বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুজ্জামান বলেন, ‘বিপদ সংকেতের ব্যাপারে পর্যটকদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাইকিং ও টহল জোরদার রয়েছে। আমাদের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’