প্রকৃতির ‘ঝাড়ুদার’ শকুন ৩০ থেকে ৪০ বছরে হারিয়ে গেছে। শুধু শকুন নয়, দিন দিন অন্য অনেক প্রাণীও হারিয়ে যাচ্ছে। এই প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে শকুন। সবশেষ শুমারি অনুযায়ী, দেশে ২৬০ থেকে ২৬৭টি শকুন আছে।
শকুনকে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের পাশাপাশি প্রকৃতিরও যত্ন নিতে হবে। শকুনকে বিলুপ্তি থেকে বাঁচাতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার ‘বিশ্ব শকুন সচেতনতা দিবস’ পালিত হয়ে থাকে।
এর অংশ হিসেবে মৌলভীবাজারে আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস ও সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১টায় জেলার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজার ও IUCN এর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস-২০২৩ এর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্টেকহোল্ডার ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে শকুন সচেতনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ। ছবি: নিউজবাংলা
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারপর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বড় পর্দায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে শকুনের ওপর একটি ডকুমেন্টারি তুলে ধরা হয়।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন।
তিনি বলেন, ‘শকুন না থাকলে প্রকৃতির ঝাড়ুদার থাকবে না। আমরা পরিবেশ, বন হারিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। শুধু শকুন ফিরে এলেই হবে না, প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে।'
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় বলেন, ‘দেশে ২৬০টি শকুন রয়েছে। সুন্দরবনের পর শকুনের নিরাপদ আবাসস্থল সিলেট অঞ্চল। এখানের রেমা কালেঙ্গাসহ বিভিন্ন বনের উঁচু গাছগাছালিতে এখনও কিছু শকুন বসবাস করছে। এসব উঁচু গাছপালা কাটা এবং পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এদের বসবাসের জন্য মারাত্মক হুমকি।’
এসব কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ এবং সবাইকে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় দেশ থেকে শকুন পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ আইইউসিএন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া উপ-অঞ্চল প্রধান রকিবুল আমিন, মৌলভীবাজারের প্যানেল মেয়র মো. নাহিদ হোসেন, আইইউসিএন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার এ বি এম সরোয়ার আলম, সিলেট বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।