ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। পাহাড়, নদী, বন, জঙ্গল, ঝরনাধারা, ফল, ফসল আর পাখিদের কলকাকলিতে রূপ মাধুর্যে ‘দুগ্ধ স্রোতরূপী’ বাংলাদেশ। এজন্যই কবি বলেছেন- এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।
নদীমাতৃক এদেশে বিভিন্ন প্রকার জলধারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্যতম হলো হাওর। এর প্রতি পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পাহাড়, নদী ও হাওরের নির্মল উজ্জ্বলতা। হাওরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জলরাশি এক অপরূপ মহিমায় পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
সিলেটের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত ‘হাইল হাওর’। এই বিশাল জলাধারে রয়েছে ১৪টি বিল এবং পানি নিষ্কাশনের ১৩টি নালা। এটির মোট আয়তন ১০ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে ৪ হাজার হেক্টর প্লাবন ভূমি, ৪ হাজার ৫১৭ হেক্টর হাওর, ১ হাজার ৪০০ হেক্টর বিল, ৪০ হেক্টর খাল ও ৫০ হেক্টর নদী। প্রচুর লতা ও গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ থাকার কারণে স্থানীয়দের কাছে এটি লতাপাতার হাওর নামেও পরিচিত।
অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে রুপের লীলা এঁকেছে এই জনপদে। পাহাড়-টিলা বেষ্টিত চিরসবুজ আর হাওর-বাঁওড় এই উপজেলায়। এ উপজেলার নানা রূপ দেখতে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসু প্রকৃতিপ্রেমীরা।
শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্যের অন্যতম স্থান হলো এই হাইল হাওর। হাওরের চিরায়ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নীল আকাশ ও পানির মিতালী যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির বাস্তব রূপ। সে কারণে হাওরের বুকে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে সারাদেশের ভ্রমণকারীরা এই ভূস্বর্গে ছুটে আসেন। হাইল হাওরে জীববৈচিত্র্যেও কমতি নেই। এই হাওরে প্রায় ৯৮ প্রজাতির মাছ ও প্রায় ১৬০ প্রজাতির পাখির বিচরণ লক্ষ্য করা যায়।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার ফকিরাফুল কিংবা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে হানিফ, শ্যামলী কিংবা এনা পরিবহনের বাসে শ্রীমঙ্গল পৌঁছতে পারবেন। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পারাবত, জয়ন্তিকা, উপবন, প্রগতি আন্তঃনগর ট্রেনে চলে আসা যায় শ্রীমঙ্গলে। হাওর ঘুরে শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন ধরনের হোটেল-রিসোর্ট আছে, যেখানে থাকতে পারবেন।