পার্বত্য জেলা বান্দরবান পাহাড়ি সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি। আর এই সৌন্দর্য সতত টানে পর্যটকদের। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস এই পার্বত্য ভূমিতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। শুক্রবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। তবে জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে রোয়াংছড়িতে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখা হয়েছে।
বান্দরবানের সীমান্ত এলাকায় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও জঙ্গি সংগঠনের অপতৎপরতা রুখতে নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানের কারণে গত বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে এখানে পর্যটক ভ্রমণে বিভিন্ন দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল।
শুক্রবার বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘জেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ সংক্রান্ত জারিকৃত গণ বিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতায় রুমা ও থানচি উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো। তবে পর্যটকদের জেলার দুর্গম এলাকায় ভ্রমণের আগে উপজেলা প্রশাসন থেকে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহপূর্বক যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’
প্রতি বছর শীত মৌসুম ও দুই ঈদের সময় বান্দরবানে হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। তবে এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে এই কয় মাস জেলাটি প্রায় পর্যটকশূন্য ছিল। ফলে জেলার দুই শতাধিক হোটেল-মোটেলের কর্মচারী ও পাঁচ শতাধিক পর্যটক গাইড এবং পর্যটকবাহী গাড়ির চালকরা বেকার হয়ে পড়েন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে এনএফের সদর দপ্তরসহ তাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাহাড়ে ঘাঁটি গাড়া জঙ্গিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর সুবাদে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেয়া হলো।
এ ব্যাপারে বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক রাজিব বড়ুয়া বলেন, ‘প্রশাসন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়ায় আমরা খুশি। এবার পর্যটকরা বান্দরবানে ভ্রমণে আসবেন, ব্যবসাও কিছুটা চাঙ্গা হবে আমাদের।’