প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের মুনি ঋষিরা তাদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং দীর্ঘজীবনের জন্য বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করতেন। এর মধ্যে ইয়োগা বা যোগ ব্যায়াম ছিলো অন্যতম। সেগুলোই পরবর্তীতে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইয়োগা কেন জরুরি সেসব নিয়ে কথা বলেছেন প্রাচীণা ইয়োগার প্রতিষ্ঠাতা এবং ঈশা ক্ল্যাসিকাল হঠ যোগ শিক্ষক রুমা চৌধুরি।
যোগব্যায়াম কেন জরুরী:
রুমা চৌধুরি বলেন, ‘ইয়োগা হলো একটা জীবনদর্শন। সামগ্রিকভাবে মানুষের শারীরিক দেহ যেমন আছে, তেমনি মানসিক দেহ, এনার্জি দেহ আছে, আধ্যাত্মিক দেহ আছে। এগুলোর প্রত্যেকটিকে সংযুক্ত করা বা ব্যালেন্স করার নামই হচ্ছে ইয়োগা। আর যখনই আমরা প্রতিটি ব্যাপারকে ব্যালেন্স করতে পারবো তখন শরীরের ভিতরের বা বাইরের যেকোনো পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সমন্বয় কিংবা মোকাবেলা করতে পারবো।
‘এসব কারণে ইয়োগা বিশেষভাবে জরুরি। ইয়োগা এমন একটি সমাধান যার মাধ্যমে আমরা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়গুলোর রিয়াকশনকে ব্যালেন্স করতে পারি। আমাদের শরীর ও মন একে অপরের সাথে অন্তরঙ্গভাবে জড়িত। তাই একটি যেভাবে রেসপন্স করবে অন্যটিও সেভাবে রেসপন্স করবে। শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যপারগুলোর সাথে বাহ্যিক ব্যাপারগুলোকে সংযুক্ত রাখতেই ইয়োগা অত্যন্ত জরুরি।’
বয়সভেদে ইয়োগা:
সাধারণত সব বয়সের মানুষই ইয়োগা করতে পারে। তবে কিছু নির্দিষ্ট প্র্যাকটিস আছে যেগুলো বারো বছর বয়সের পর করতে পারবেন। এর মধ্যে তার শারীরিক কোনো রোগ আছে কিনা বা অতীতের কোনো জটিল রোগের হিস্ট্রি আছে কিনা এগুলো জেনে নিতে হয়। তবে মূলত বারো বছরের পর থেকেই সব ধরণের যোগ ব্যায়াম আপনি করতে পারবেন। আর এর নিচের বয়সের ক্ষেত্রে তানায়ম শেখানো হয় অর্থাৎ শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম। এটা সাধারণত তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত শেখানো হয়।
ক্যালরি গ্রহণে সচেতনতা:
যেকোনো শারীরিক ব্যায়ামে কিছু না কিছু ক্যালরি ক্ষয় হয়। তবে ইয়োগা এমন একটি প্র্যাকটিস যেটা করলে অতিরিক্ত ক্যালরি ক্ষয় হয়না বলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের দরকার পরে না। বরং এটা এমন একটা প্রসেস যেটা করার পর চাইলেও অতিরিক্ত খাবার খেতে পারবেন না। শরীরের জন্য স্বাভাবিক নিয়মেই আমাদের সঠিক খাবার গ্রহণ করা জরুরি। তবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবজির পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে শরীরে নমনীয়তা বাড়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।