বাংলা ভাষার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণ মেনে নিতে পারছে না বাংলার সাহিত্য জগৎ। লেখকের সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত এবং তার সৃষ্টির কথাই বার বার মনে পড়ছে সাহিত্যপথের সহযাত্রীদের।
সোমবার বিকেলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় হাসপাতালে ৭৯ বছর বয়সে সমরেশের মৃত্যুর পর আনন্দবাজার পত্রিকার কাছে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শংকর ও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
সমরেশ মজুমদারের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের। ‘লোটাকম্বল’-এর লেখক বলেছেন, ‘আমার কাছে এই খবরটা যেন একটা বজ্রাঘাত! কারণ সমরেশের সঙ্গে আমার লেখক জীবনের শুরু থেকেই অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল।’
এই প্রসঙ্গেই প্রয়াত বন্ধুর স্মৃতিচারণ করলেন সঞ্জীব। বললেন, একমাত্র ও আমাকে ‘সঞ্জু’ বলে ডাকত। ওর ওই সঞ্জু ডাকটি বড়ই মধুর ছিল। ভাবতেই পারছি না, ওর মতো এর স্বাস্থ্যবান একজন যুবক কী করে এত তাড়াতাড়ি চলে গেল।
সত্যসন্ধানী ‘অর্জুন’-এর স্রষ্টার প্রয়াণ মেনে নিতে পারছেন না সাহিত্যিক শংকর। তিনি বললেন, ‘লেখক হিসেবে ও জনপ্রিয় হওয়ার আগে থেকেই আমি ওকে চিনতাম। কারণ, স্কটিশ চার্চ কলেজে আমার ভাইয়ের সহপাঠী ছিল সমরেশ।’
এ প্রসঙ্গেই তিনি আরও বললেন, ‘নিয়মিত যোগাযোগ ছিল আমাদের। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখাও হতো। একটাই কথা বলতে চাই, ওর মতো ছেলে আমি খুব কমই দেখেছি। ওর চলে যাওয়াটা আমার কাছে ব্যক্তিগত শোক।’
সমরেশ মজুদারের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তার প্রশ্ন, ‘সমরেশ চলে যাওয়ার মানে এখন বাংলা সাহিত্যে আর কে রইল?’ এই প্রসঙ্গেই বর্ষীয়ান সাহিত্যিক বললেন, ‘লেখক হওয়ার আগে থেকেই আমি সমরেশকে চিনতাম।’
উত্তর কলকাতার বোর্ডিং হাউজ়ে থাকার সময় লেখকের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন সমরেশ মজুদার। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এবং সমরেশ মজুমদার দু’জনেই উত্তরবঙ্গের মানুষ।
শীর্ষেন্দু বলেন, ‘তাই ওর প্রতি আমার একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল।’
সমরেশ মজুমদারকে ‘বাবলু’ নামে ডাকতেন শীর্ষেন্দু। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রবীণ সাহিত্যিক বলেন, ‘এক সঙ্গে আমরা দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়েছি। ইদানিং ও আমাকে বলত যে, বাবলু বলে ওকে ডাকার আর কেউ নেই।’