বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিশুর বিকাশে সঠিক প্যারেন্টিং করবেন যেভাবে

  •    
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২৩ ১৩:৪৮

‘শিশুর শৈশবকালীন পরিচর্যা অর্থাৎ তাকে যেভাবে বড় করা হয় তার উপর তার ভবিষ্যৎ জীবনের উপড় গভীর প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষ করে তার সামাজিক পরিপক্কতা ও মানসিক সুস্থতার বিষয়ে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদের কিছু বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরী।’

শিশুর সঠিক বিকাশের উপর নির্ভর করে তার শারীরিক ও মানসিক গঠন। তাকে সুষ্ঠু পরিবেশে বড় হওয়ার সুযোগ করে দিতে হয় বাবা মা এবং আশেপাশের মানুষকে। শিশুর বিকাশে সঠিক পরিচর্যার বিষয়ে মতামত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সহকারী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক জনাব তৌহিদুল হক।

অনেক ক্ষেত্রেই বাবা মায়ের উদাসীনতার জন্য শিশুরা সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় না। তাই তাদের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য সঠিক পরিচর্যা ও বাবা মা'র সচেতনতা একান্ত প্রয়োজন।

তৌহিদুল হক বলেন, ‘শিশুর শৈশবকালীন পরিচর্যা অর্থাৎ তাকে যেভাবে বড় করা হয় তার উপর তার ভবিষ্যৎ জীবনের উপড় গভীর প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষ করে তার সামাজিক পরিপক্কতা ও মানসিক সুস্থতার বিষয়ে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদের কিছু বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরী।’

সুষ্ঠু পরিবেশশিশুর সুষ্ঠু বিকাশের ক্ষেত্রে সঠিক পরিবেশের কথা বার বারই উঠে আসে। কারণ শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। ছোট থেকে যে পরিবেশে সে বড় হবে সেখান থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করবে। আর জটিল ও নেতিবাচক বিষয়গুলো শিশুমনে বেশি প্রভাব ফেলে। তাই শিশুকে যতটা সম্ভব পারিবারিক ও সামাজিক জটিলতা থেকে দূরে রেখে সুস্থ ও সুন্দর একটি পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

অধিক চাপ না দেয়া

এখন বাবা মায়ের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখা যায়, তারা সন্তানকে ভালো শিক্ষার্থী বা ভালো রেজাল্টকেন্দ্রিক একটা চাপ প্রয়োগ করে থাকেন। এটা ঠিক যে শিক্ষা মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি শিশুকে পরিপূর্ণভাবে মানুষ করতে গেলে তাকে সুশিক্ষিত হওয়া অবশ্যই জরুরী। কিন্তু সেটা অবশ্যই চাপ প্রয়োগ করে নয়। শিশুকে পারিপার্শ্বিক ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলোর পার্থক্য শেখাতে হবে প্রথমে। খেয়াল রাখতে হবে কোন কিছুই যেন তার মানসিক চাপের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।

নৈতিক শিক্ষা

শিশুকে ভালো মন্দের পার্থক্যটা শেখানোর পাশাপাশি সবচেয়ে জরুরী হলো তার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করা। আর সেইজন্য প্রয়োজন পুঁথিগত শিক্ষার আগে তাকে নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা। বুঝতে শেখার শুরুতেই মনুষ্যত্ব, নীতিবোধ, শিষ্ঠাচার, সামাজিকীকরণ সবকিছু সমন্ধে শিশুকে জানাতে হবে। কারণ সুশিক্ষিত হওয়ার আগে ভালো মানুষ হয়ে গড়ে ওঠা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ

সন্তানকে একটি পরিপূর্ণ শৈশব দিতে হলে অভিভাবকে তার সাথে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করতে হবে। সব সময় কঠোর শাসনে রাখলে শিশুর মনে একটা ভয় বাসা বাঁধে। আপনার সন্তান কার সাথে মিশছে, কোন বন্ধুর সাথে খেলছে এগুলো জানার জন্য তার সাথে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলুন। তবেই সে নির্দিধায় আপনার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করতে পারবে। কখনোই ভাববেন না, ও তো ছোট; কি আর বুঝবে! বরং ছোটবেলায় শিশুদের মস্তিষ্ক বেশি সচল থাকে। এই সময় যা কিছু সে অর্জন করে সেটাই তার পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই আপনার সন্তান কথা শেখার পর থেকেই তার কথা শোনা, তার সাথে বেশি বেশি কথা বলা এবং তার অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ করে দেওয়া প্রতিটি বাবা মায়ের কর্তব্য।

সাংস্কৃতিক শিক্ষা

শিশুকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা করার সুযোগ করে দিতে হবে। বিভিন্ন শিশুতোষ গল্প, কবিতা, গান এগুলোর মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ আরও বিস্তার লাভ করে। এছাড়া সুযোগ পেলেই শিশুকে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে নিয়ে যেতে পারেন। শুধু স্কুলের পড়াশোনার মধ্যে না রেখে বিভিন্ন রেফারেন্স বই পড়তে দিন। এতে শিশু পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে এবং নতুন বিষয় জানার আগ্রহ তৈরি হবে।

প্রতিটি শিশুর সার্বিক গঠনে পরিবারকে যেমন সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হয় পাশাপাশি তার আশেপাশের মানুষদের প্রভাবও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আর সহজ এই পন্থাগুলো অবলম্বন করলে শিশুর সুষ্ঠু ও গঠনমূলক বিকাশ ঘঠানো সম্ভব। আর তার মধ্যে আদর্শ, ন্যায়নীতিবোধ না থাকলে ইতিবাচক কোনো কিছুই আমরা আশা করতে পারিনা। তাই একজন ভালো মানুষ হয়ে ওঠার ইচ্ছেশক্তি তার মধ্যে সৃষ্টি করার দায়িত্ব সবার। কারণ আজকের শিশুই ভবিষ্যতে তার পরিবারের প্রতি, সমাজের প্রতি এবং রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে।

এ বিভাগের আরো খবর