বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রাচীন বাণিজ্য হাব গুয়াংজু

  •    
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ ১৫:৩৪

প্রতি বছর বসন্ত ও শরৎকালে গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত হয় আমদানি ও রপ্তানি মেলা বা ‘ক্যান্টন ফেয়ার’। মেলায় ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে অনেক ব্যবসায়ী ও বিদেশি উদ্যোক্তা অংশ নেন।

দক্ষিণ চীনের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক, শিল্প ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গুয়াংজু। এটি প্রাচীন বাণিজ্য বন্দর হিসেবেও পরিচিত। নানা সময়ে নানা সংকটেও বন্ধ হয়নি এই বন্দর।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যয়ে পড়েও দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে গুয়াংজু। ২০২২ সালে গুয়াংজুর জিডিপি ছিল ২ হাজার ৮৮৫ বিলিয়ন ইউয়ান। আগের বছরের চেয়ে বাড়ে ১ শতাংশ। শিল্প, রপ্তানি ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এই অঞ্চল।

গুয়াংজুতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে ক্ষেত্রে ভালো বছর ছিল ২০২২ সাল। শিল্প কারখানায় আগের বছরের তুলনায় বিনিয়োগ বাড়ে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

প্রতি বছর বসন্ত ও শরৎকালে গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত হয় আমদানি ও রপ্তানি মেলা বা ‘ক্যান্টন ফেয়ার’। মেলায় ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে অনেক ব্যবসায়ী ও বিদেশি উদ্যোক্তা অংশ নেন।

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে গুয়াংজু বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। এই এলাকায় রয়েছে বিশ্বমানের জাদুঘর, সমৃদ্ধ শিল্প ও সংস্কৃতিক কেন্দ্র, ক্যান্টন টাওয়ার ও ক্যান্টনিজ খাবার।

গুয়াংজু বিশ্বব্যাপী পরিবহন ও বাণিজ্য কেন্দ্র। এ ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠিত উদীয়মান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত গুয়াংজু।

যেন ফুলের শহর!

চীনের অন্যতম ফুলের শহর গুয়াংজু। বলা যায় আশ্চর্যজনকভাবে সবুজ চার পাশ। বাইয়ান পর্বতের গা ঘেঁষে রয়েছে চীনের বৃহত্তম ল্যান্ড স্কেপ বাগান। এই গার্ডেনের রাস্তার দুই পাশে সারি সারি ফুল, যা সকলকেই মুগ্ধ করে।

হিমশীতল আবহাওয়ায় ফুটে থাকে চেরি ফুল। নানা রং আর রূপ নিয়ে বসন্তকে রাঙিয়ে দিতে প্রতি বছর চেরি ফুল ফোটে। গুচ্ছবদ্ধ ফুলগুলো প্রধানত গোলাপি, সাদা ও লাল রঙের হয়। পাপড়ি ও ফুলের গড়নও বিচিত্র। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে চেরি গাছ থেকে অবিরাম খসে পড়তে থাকে লাল, খয়েরি ও বাদামি পাতা। প্রস্ফুটিত চেরি ফুলকে ঘিরে গাছে গাছে রঙিন প্রজাপতির মেলা বসে।

ক্যান্টন টাওয়ার

গুয়াংজুকে সমৃদ্ধ করেছে ক্যান্টন টাওয়ার। এটি গুয়াংজু নিউ সিটি সেন্ট্রাল অ্যাক্সিস ও পার্ল নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত। হাইক্সিনশা দ্বীপ ও ঝুজিয়াং নিউ টাউনের মুখোমুখি জায়গায় এর অবস্থান। এটি বর্তমানে চীনের সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ টাওয়ার।

ক্যান্টন টাওয়ার ৬০০ মিটার উঁচু, যার মূল অংশের ৪৫০ মিটার এবং এর অ্যান্টেনার ১৫০ মিটার। ড্রাগন বোটে সুন্দর পার্ল নদীতে ভ্রমণ করার সময় ক্যান্টন টাওয়ারটি রংধনুর মতো আলোকিত করে।

ক্যান্টন টাওয়ার একটি দর্শনীয় ভবন এবং সেই সঙ্গে দর্শনীয় স্থানও। এতে বিভিন্ন ধরনের অ্যাডভেঞ্চার, খাদ্য ও পানীয়, বিয়ের অনুষ্ঠান, নানান সিনেমা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং কেনাকাটাসহ নানা সুবিধা রয়েছে। অনেকেই ক্যান্টন টাওয়ারকে বিখ্যাত পর্যটক আকর্ষণ কেন্দ্র হিসেবেও বলে থাকে। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ গ্রেট টাওয়ারের সবচেয়ে মূল্যবান সদস্য এই ভবন।

পার্ল রিভার নাইট ক্রুজ

গুয়াংজুর আটটি অঞ্চলের মধ্যে পার্ল রিভার নাইট ক্রুজ পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এটি ফ্লাওয়ার সিটি স্কোয়ারের কাছাকাছি এবং এটি অবস্থিত হাইক্সিনশা দ্বীপের পূর্ব দিকে। এই দ্বীপেই ১৬তম এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী এবং সমাপনী অনুষ্ঠান হয়েছিল।

ক্যান্টন টাওয়ার থেকে পার্ল নদী পর্যন্ত দুই পাশের পানির সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন মানুষ। পর্যটকরা যখন শিপে উঠেন, তখন তারা গুয়াংজুর ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিতি হন। গুয়াংজুর হাজার বছরের ইতিহাস ধীরে ধীরে তাদের চোখের সামনে উন্মোচিত হয়।

পর্যটকরা হাজার বছরের ইতিহাসসহ বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত গুয়াংজুর পরিবর্তন দেখতে পান। শিপে বুফে ডিনারের সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছা করলে পর্যটকরা ক্যান্টন টাওয়ার, হাইক্সিনশা দ্বীপ, গুয়াংজু ব্রিজ, লিয়েডে ব্রিজ, শিংঘাই কনসার্ট হল, হাইয়িন ব্রিজ, হোচিমিন স্কয়ার ইত্যাদি উপভোগ করতে পারেন।

ক্যান্টনিজ অপেরা আর্ট মিউজিয়াম

এটি লিউয়ান শহরে অবস্থিত। জাদুঘরটি উত্তর ও দক্ষিণ ভাগে বিভক্ত। দক্ষিণ তীরে বেসিক প্রদর্শনী হল, থিম প্রদর্শনী হল, থিয়েটার, মনোরম উদ্যান রয়েছে। উত্তর তীরটি ক্যান্টনিজ অপেরা শিল্প সংরক্ষণের জন্য রাখা৷ দক্ষিণ তীরের নৈসর্গিক বাগানে লিংনান গার্ডেন-স্টাইলের অ্যান্টিক বিল্ড একটি ক্রস বরাবর সাজানো রয়েছে। ওয়ানশা লেকের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন কারুকাজ। অলঙ্করণের মধ্যে রয়েছে কাঠের ওপর খোদাই, ইট খোদাই, মৃৎপাত্রের ভাস্কর্য এবং প্লাস্টিক ভাস্কর্য।

বাগানের কেন্দ্রে একটি ওয়াটারফ্রন্ট স্টেজ রয়েছে। ২০১৭ সালে জাদুঘরটি চায়না কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লুবান পুরস্কার পেয়েছে, যা দেশের নির্মাণ শিল্পে প্রকৌশল মানের উচ্চ সম্মাননা।

এ বিভাগের আরো খবর