চলছে তাপদাহ। প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে পানি বের হয়ে যায় এবং যদি পর্যাপ্ত পানি পান করা না হয় তাহলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়া স্বাভাবিক। আর এভাবেই বেড়ে যায় প্রস্রাবে সংক্রমণ কিংবা ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যা।
ইউরিন ইনফেকশন কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয় কি সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম শেখ।
তিনি বলেন ‘সাধারণত মূত্রনালিতে সংক্রমণ আচমকাই হানা দেয়। এর সঠিক চিকিৎসা করা না হলে সংক্রমণ কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নিলে পরিণাম হতে পারে মারাত্মক।
‘অনেকে এ সমস্যায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বাজারচলতি কিছু ওষুধ ব্যবহার করেন। যা একেবারেই উচিত নয়।
‘সাধারণত নারীরা প্রস্রাবে সংক্রমণের বেশি ভুগে থাকেন। পানি কম খাওয়া, ঘরে বাইরে বেশি কাজ করার কারণে এটি বেশি হয়।’
লক্ষ্মণ
প্রস্রাবের সংক্রমণের কারণে জ্বর হলে তার সঙ্গে সর্দি-কাশি বা গলা ব্যথা থাকে না। এর পাশাপাশি দেখা দেয় আরও লক্ষণ। যেমন- * প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ, প্রস্রাবের রং হলুদ বা লালচে, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত, দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, নারীদের গোপনাঙ্গে ব্যথা, পুরুষদের মলদ্বারে ব্যথা ইত্যাদি। অবস্থা বেশি সংকটাপন্ন হলে পেট ও কোমরের মাঝামাঝিতে ব্যথা অনুভব করা, শীত লাগা, জ্বর, বমি বমি ভাব, বমি ইত্যাদি হতে পারে।
করণীয়
• ইউরিন ইনফেকশন হলে অবশ্যই পানি খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। প্রস্রাবে হলুদ ভাব দেখা দিলে দেরি না করে দিনে অন্তত আড়াই লিটার পানি খেতে হবে। সাধারণত প্রতি ৪-৫ ঘণ্টা পর পর প্রস্রাব হওয়া উচিত।
• এর চেয়ে প্রস্রাব বেশি দেরিতে হলে পানির পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে পারে। বেশিক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখা যাবে না। এতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
• রোগীরা অবশ্যই খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি রাখবেন। এতে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমবে। এছাড়া ভিটামিন সি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
• ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি আনারস খেলে মিলবে আরও উপকারিতা। কারণ এই ফলে আছে ব্রোমেলাইন নামক একটি উপকারী উৎসেচক।
• এ সময় প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। কারণ এই খাবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়। ফলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় ও সংক্রমণ কমায়। টকদই প্রোবায়োটিকের ভালো উৎস।
প্রোবায়োটিক হলো উপকারী অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়া, যারা ক্ষতিকর বা রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে।