শিশুর সুস্থতা নির্ভর করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর। সার্বিক সুস্থতার জন্য সবসময় কিছু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। এসব স্বাস্থ্যবিধি বা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস শিশুদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই গড়ে তোলা উচিত। আর এটা করতে হয় অভিভাবকদের। কথায় আছে, পরিবারই শিশুর প্রথম স্কুল।
কীভাবে শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলোয় অভ্যস্ত করে তুলবেন এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গাজী হোসনে আরা।
নিয়মিত গোসল
সুস্থতার জন্য চাই নিয়মিত গোসল। একটু ঠান্ডা পড়লেই অনেকে শিশুকে গোসল করাতে চান না। এটা ঠিক নয়; বরং শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে।
গোসল না করালে শরীরে র্যাশ, চুলকানি, ছত্রাকের সংক্রমণসহ নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা থাকলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করিয়ে দিন।
গোসলের সময় শিশুর গলার নিচে, ঘাড়, বগল, হাঁটুর ভাঁজ ইত্যাদি জায়গা পরিষ্কার করে দিন।
হাত ধোয়া
শিশুর মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। শীত-গরম যাই থাকুক, বাইরে থেকে এসে ও খাওয়ার আগে শিশুকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ায় অভ্যস্ত করুন, তবে হাত ধোয়ারও নিয়ম আছে।
১. দুই হাতের কনুই অবধি ভালোভাবে সাবান লাগিয়ে নিন।
২. দুই হাতের তালু পরস্পর, ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠে, বাম হাতের তালু ডান হাতের পিঠে, এক হাতের আঙুলের পিঠ অন্য হাতের তালুতে, এক হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি অন্য হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে, দুই হাতের তালু পরস্পর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হাত ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।
শিশুকে এই নিয়মে হাত ধোয়া শেখাতে চেষ্টা করুন।
টয়লেটে পানি ব্যবহার
টয়লেটে মলত্যাগ বা প্রস্রাবের পর পানি ব্যবহার, টয়লটে পরিষ্কার রাখা, টয়লেটে স্যান্ডেল পায়ে যাওয়া, হাত ধোয়ার মতো বিষয়গুলো শিশুকে শিখিয়ে দিতে হবে।
টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। এ বিষয়গুলো শিশু নিজে নিজে শিখে যাবে, এটা আশা করা উচিত হবে না। কারণ দেখা যায়, এগুলো শিশুরা হয়তো জানে, কিন্তু পালন করার অভ্যাসটা অনেক শিশুর মধ্যেই গড়ে ওঠে না।
নখ পরিষ্কার
নখের ময়লা থেকে হতে পারে অনেক রোগ। তাই নখ ছোট ও পরিষ্কার রাখা শিশুকে শেখাতে হবে। সপ্তাহে একবার নখ কাটতে হবে। অনেক শিশুকে দেখা যায় দাঁত দিয়ে নখ কাটতে, যা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। খেয়াল রাখবেন যেন এ বদ অভ্যাস শিশুর না হয়।
উৎসাহ দিন
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো শিশুকে চাপিয়ে না দিয়ে উৎসাহ দিয়ে শেখানোর চেষ্টা করুন। এতে শিশু নিজে থেকেই পরিচ্ছন্ন থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। দাঁত ব্রাশ করলে, হাত ধুলে শিশুর প্রশংসা করুন। এর উপকারিতাগুলো শিশুকে বলুন। শিশু উৎসাহিত হবে।