ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ। প্রতি বছর সারা বিশ্বের মুসলিমরা হজ পালন করেন। ব্যতিক্রম নন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও। এ ক্ষেত্রে তাদের অবলম্বন করতে হয় বেশ কিছু সতর্কতা।
নির্দেশনা
হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডায়াবেটিস প্রিভেনশন থ্রো রিলিজিয়াস লিডার্স (ডিপিআরএল) নামের উদ্যোগ। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ নিয়ে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রামের যৌথ এ প্রয়াসে সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।
হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডিপিআরএলের পরামর্শগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
১. হজযাত্রার দুই মাস আগেই ডায়াবেটিস চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. প্রয়োজনীয় টিকা তথা ভ্যাকসিন নিতে হবে।
৩. চিকিৎসকের কাছ থেকে পরিপূর্ণ ব্যবস্থাপত্র বা প্রেসক্রিপশন নিয়ে নিতে হবে।
৪. জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করে নিতে হবে। (কমপক্ষে ৪৫ দিনের ওষুধ)
৫. অসুস্থতার দিনে (যেমন: ডায়রিয়া, বমি, সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি) আপনার করণীয় সম্পর্কে চিকিৎসক অথবা হেলথ এডুকেটরের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামল ও ওআরএসের মতো ওষুধ সঙ্গে নিতে হবে।
৬. একটি ভালো গ্লুকোমিটার, স্ট্রিপ, লেনসেট ও অ্যালকোহল সোয়াব সঙ্গে নিতে হবে।
৭. ইনসুলিন ব্যবহার করলে ইনসুলিন ভায়াল, পেন, সিরিঞ্জ ও নিডল সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। যদি ঠান্ডা জায়গায় রাখার ব্যবস্থা না থাকে মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে, সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রয়োজনমতো ইনসুলিন নিয়ে যাবেন। বাকি ইনসুলিন মক্কায় আপনার ফ্রিজে রেখে যাবেন।
৮. হাইপোগ্লাইসেমিয়া চিকিৎসার জন্য দ্রব্যাদি, যেমন: গ্লুকোজের ট্যাবলেট, চকলেট, জেল বা জেলি, জুস, মিষ্টি বিস্কুট বা কেক সঙ্গে রাখতে হবে।
৯. খাবার খেতে বা পেতে দেরি হলে তা মোকাবিলার জন্য শর্করাজাতীয় পানীয় সঙ্গে রাখুন, তবে অত্যধিক শর্করাজাতীয় পানীয়, ফ্রুট জুস ও খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
১০. আরামদায়ক ও সঠিক মাপের জুতা সঙ্গে নিতে হবে।
পায়ের যত্নে করণীয়
১. সবসময় নরম, বদ্ধ ও আরামদায়ক স্যান্ডেল বা কাপড়ের জুতা ব্যবহার করা উচিত।
২. নতুন জুতা না পরা ভালো। অভ্যস্ত হতে সময় লাগে এমনকি পায়ে ফোসকা পড়তে পারে। হজের দুই-তিন মাস আগে কেনা জুতা, যা পায়ে ফিট হয়ে গেছে, তাই পরা ভালো।
৩. পা ধোয়া, অজু বা গোসল করার পরে খেয়াল রাখতে হবে যাতে পায়ের আঙুলের ফাঁকে ভেজা না থাকে। টিস্যু পেপার দিয়ে পা শুকিয়ে নিন। পায়ে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকলে তাওয়াফ ও সা’ঈ করার সময় নরম মোজা ব্যবহার করতে পারেন।
৪. যেকোনো ভিড়ের সময় পা সাবধানে রাখা উচিত।
৫. পা পরিষ্কার ও নখ কেটে ছোট করা উচিত।
৬. প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগানো উচিত।
৭. প্রতিদিন পা পর্যবেক্ষণ করুন। বিশেষ করে ওপরের দিক, পায়ের আঙুলের ফাঁকে, পায়ের তলা এবং গোড়ালি ভালোভাবে পরীক্ষা করা জরুরি।
৮. যদি কখনও পায়ে আঘাত লাগে বা ক্ষত সৃষ্টি হয়, তবে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসাকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।