চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের খাদ থেকে আশুতোষ নাথ নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া শিবচতুর্দশী মেলায় আসা এক পুণ্যার্থী নিখোঁজ রয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৪৫ বছর বয়সী আশুতোষ নাথ সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং মেলা পরিচালনা কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক স্বপন কুমার নাথের ভাতিজা।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মেলা শুরুর পর ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজের মোট চারটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়কেন্দ্রিক ছিল দুজন। বাকি দুজন প্রেমঘটিত বিষয়ে মুসলিম নারী।
‘পাহাড়কেন্দ্রিক নিখোঁজ দুজনের মধ্যে একজন ছিলেন ডেকোরেশন শ্রমিক। অন্যজন নেত্রকোণা থেকে আসা পুণ্যার্থী। যার মরদেহ পাওয়া গেছে তিনিই সেই ডেকোরেশন শ্রমিক।’
ওসি আরো বলেন, ‘নেত্রকোণা থেকে আসা নিখোঁজ পুণ্যার্থী ১৭ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রনাথে শিবচতুর্দশী মেলায় আসেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোনটি খোলা ছিল। মোবাইলের সবশেষ অবস্থান চন্দ্রনাথ পাহাড় দেখা যাচ্ছে। আমরা খোঁজ করছি।’
এর আগে শনিবার রাতে চন্দ্রনাথ ধাম থেকে সিঁড়ি ভেঙে তিনজন পড়ে নিখোঁজের গুজব সৃষ্টির কথা জানিয়েছিলেন মেলা কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য উজ্জ্বল মজুমদার শিফন।
এই দুজন তখন নিখোঁজ কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘ওটা গুজবই ছিল। কারণ আজ যে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে ওটা তীর্থযাত্রীদের জন্য নির্ধারিত পথের আশপাশে ছিল না। পাশের অন্য একটি পাহাড়ের কাছে ছিল। আর মেলায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়। সিঁড়ি ভেঙে পড়লে তো একজন বা তিনজন পড়বে না, আরো বেশি মানুষ পড়ার কথা।’
প্রতিবছরের মতো শুক্রবার সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে শুরু হয়েছে শিব চতুর্দশী মেলা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ২০০ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় থাকা চন্দ্রনাথ ধামে অনুষ্ঠিত এই মেলা প্রতিবছর তিন দিনের হলেও এবার তিথির কারণে শেষ হয় চার দিনে।
মূলত শিব চতুর্দশী তিথিতে শিবের মাথায় জল দেয়াকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয় চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। তাদের ঘিরেই আয়োজন করা হয় এই মেলার। প্রতিবছর ১৫ থেকে ২০ লাখ লোকের সমাগম ঘটে মেলায়। উপজেলা সদর থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড় পর্যন্ত বসে এই মেলা।
তিনশ’ বছর ধরে এটিই দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় জমায়েত বলে দাবি মেলা আয়োজকদের।