বেনাপোল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মঙ্গলবার বেনাপোল চেকপোস্টে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই বাংলার ভাষাপ্রেমী মানুষের মিলন মেলা।
সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুই বাংলার মানুষের মিলন মেলা উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চ ও অস্থায়ী শহীদ বেদী। এর আয়োজন করেছে দুই বাংলার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন পরিষদ।
অমর একুশের দিনে পৃথক দুটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চে সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এই মিলন মেলা। এতে অংশ নিয়েছে দুই দেশের হাজারো মানুষ।
মিলন মেলা অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মনজু জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে প্রতি বছরের মতো এবারও বেনাপোল নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় দুই বাংলার ভাষাপ্রেমী মানুষের মিলন মেলা বসেছে। এ উপলক্ষে নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় নির্মাণ করা হয় অস্থায়ী শহীদ বেদী। নো-ম্যান্স ল্যান্ডকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।
বেনাপোলে মঙ্গলবার একুশের আয়োজনে দুই বাংলার রাজনীতিক ও অনুষ্ঠানের আয়োজকবৃন্দ। ছবি: নিউজবাংলা
এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন।
সকাল সাড়ে ১১টায় বেনাপোল-পেট্রাপোল নো-ম্যান্স ল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দুই বাংলার আমন্ত্রিত মন্ত্রী, এমপিসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, কবি, সাহিত্যিক, লেখক এবং ভাষাপ্রেমী সাধারণ মানুষ। এ সময় কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে দুই দেশের সাধারণ মানুষ একাকার হয়ে যান। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।
অস্থায়ী শহীদ বেদীতে উভয় দেশের আমন্ত্রিত অতিথিরা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে বাংলাদেশ অংশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চে’ সমবেত হন সবাই।
সেখানে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ইর/ আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এ সময় মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশিত হয় দুই বাংলার গান ও কবিতা আবৃত্তি।
বিজিবি ও বিএসএফ কর্মকর্তাদের পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময়। ছবি: নিউজবাংলা
ভারত অংশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চে’ ছিল বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহীদদের নিয়ে আলোচনা সভা, গান ও কবিতা আবৃত্তি।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘আমরা আজ ভাষার টানে দুই বাংলার মানুষ একত্রিত হয়েছি। কাঁটাতারের বেড়া আমাদেরকে বিভক্ত করে রাখতে পারেনি।’
এই আয়োজনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার তানভির আহম্মেদ ও বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (অ. দা.) ট্রাফিক আব্দুল জলিল। ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বজীৎ দাস, গোপাল শেঠ, শ্রীমত্য মমতা ঠাকুর, শ্যামল রায় ও বনগাঁ পৌরসভার উপ-পৌরমাতা জ্যোৎস্না আঢ্য।
অন্যান্যবারের মতো এবারও বিনিময় হয় দুই বাংলার মানুষের স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।
ভাষা দিবসের এই আয়োজন ঘিরে ছিল কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয় বিজিবি ও বিএসএফ-এর অতিরিক্ত সদস্য।