দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রণীতা পোদ্দার প্রাপ্তি। ভাষা দিবসে অমর একুশে বইমেলায় এসে সে বই কিনেছে কয়েকটা। তার পছন্দ গল্প, ছড়া।
নতুন বই কেনার অনুভূতি জানাতে গিয়ে প্রাপ্তি বলে, ‘ঘুরে ঘুরে মেলা দেখেছি আর পছন্দের বই কিনেছি। খুব ভালো লাগছে।’
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাত। মা-বাবা আর বোনের সঙ্গে এসেছে বই কিনতে। সে খুঁজছে ভুতের আর গেয়েন্দা সিরিজ। জান্নাত বলে ‘আমি তো দুপুর থেকেই বায়না ধরে মা-বাবাকে মেলায় নিয়ে এসেছি।’
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভিড় বেড়েছে বইমেলায়। প্রিয়জনকে বই উপহার দিচ্ছেন অনেকেই।
স্ত্রীকে বই মেলা থেকে একটি উপন্যাসের বই কিনে দিয়েছেন মো. হায়দার। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘‘আমরা সকাল থেকেই মেলায়। স্ত্রী বই পড়তে পছন্দ করেন। আর হুমায়ুন আহমেদ তো কথাই নেই। তাই স্যারের ‘নবনী’ উপন্যাসটি কিনে দিলাম।’’
কথা হয় প্রকাশকদের সাথে। বাঙালি প্রকাশনার প্রকাশক নজরুল ইসলাম বলেন, ছুটির দিনগুলোতে ভিড় বেশি হয়। তবে একুশে ফ্রেব্রুয়ারিতে ভাষা দিবস উপলক্ষে মানুষের সমাগম বেশিই দেখা যায়। এদিনটা বই বিক্রিও হয়। পাঠকের হাতে হাতে বই। দেখতেই ভালো লাগে।
দেশ পাবলিকেশন্স এর প্রকাশক অচিন্ত্য চয়ন বলেন, ‘এবার মেলা জমজমাট। গত বছরও করোনার ভয় ছিলো। তবে এবার সেটা কাটিয়ে উঠেছে মানুষ। অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ ভিড় বেশি। এবার সন্তুষ্টির জায়গাটাও রয়েছে প্রকাশক হিসেবে।’
অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন মেলায় লেখকদের আনাগোনাও ছিল বেশ। লেখক লাবণ্য লিপি অর্ণব আশিক, অন্ত মিলনসহ দেখা গেছে অনেককেই। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার অটোগ্রাফ দেয়ায় ব্যস্ত ছিলেন।
বইমেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাকিল মামুন বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বরাবরের মতোই জোরালো। কোনো ধরনের অরাজকতার ঘটনা ঘটেনি এখন পর্যন্ত। সবাই নিশ্চিন্তে ঘোরাঘুরি করতে পারছেন।’
মেলার দর্শনার্থীদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বই কেনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে কেউ কেউ বলেন মেলার জৌলুস এখন আর আগের মতো পাইনা।
আবু সালেহ নামে একজন বলেন, 'মেলা এখন ঘোরার জায়গা হয়ে গেছে। মানুষ বই কিনবে, পড়বে। সেই আনন্দ চোখে মুখে থাকবে। সেটা আর দেখতে পাই না। আগে দেখা যেত, বই কিনে ভার নিতে পারছেন না ক্রেতারা। এখন শুধু ছবিই তুলতে আসে মনে হয়।'