ফিফা বিশ্বকাপ কড়া নাড়ছে দোরগোড়ায়। বাংলাদেশ কখনও মূল পর্বে খেলার সুযোগ না পেলেও ‘বিগেস্ট শো অন আর্থ’ নিয়ে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনার শেষ নেই।
প্রিয় দলের সমর্থনে ভিনদেশি পতাকা আর জার্সি কেনার হিড়িক চারদিকে। তবে কি শুধু পতাকা আর জার্সিতেই চলবে? আয়েশি ভঙ্গিতে জমিয়ে বসে প্রিয় দলের খেলা উপভোগের দারুণ এক ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ‘আমানত শাহ লুঙ্গি’।
ফুটবলে বেশি জনপ্রিয় দলগুলো জার্সির আদলে তারা বাজারে এনেছে বিশ্বকাপ স্পেশাল লুঙ্গি। এগুলোর নকশা করেছেন প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ডিজাইনার পলাশ। মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যেই বিক্রি হয়েছে চার লাখ পিস।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে জানান, তারা ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে এবারই প্রথম জার্সির আদলে লুঙ্গি বাজারে ছেড়েছেন। প্রথম পাঁচ দিনে চার লাখ পিস বিক্রির পর দ্বিতীয় দফায় পণ্য তৈরির কাজ চলছে।
আমানত শাহ লুঙ্গির ব্র্যান্ড ম্যানেজার মো. মুজাহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বানানো প্রথম চার লাখ পিস শেষ। আরও দুই লাখ বানানোর কাজ চলছে।’
তার আশা বৃহস্পতিবার থেকে আবারও আগ্রহী ক্রেতারা তাদের পছন্দের লুঙ্গির জোগান পাবেন। মুজাহিদ বলেন, ‘এখন কেউ লুঙ্গির অর্ডার দিলে আমরা সেটি প্রি-অর্ডার হিসেবে নিচ্ছি। বৃহস্পতিবার থেকে ডেলিভারি দেয়া শুরু করব।’
সমর্থকদের সংখ্যা বিবেচনায় পাঁচটি জনপ্রিয় দলের জার্সির আদলে লুঙ্গিগুলো বানিয়েছে আমানত শাহ লুঙ্গি। এগুলোর হলো ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ফ্রান্স এবং স্পেন।
মুজাহিদ বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে আর্জেন্টিনার লুঙ্গির, তার পরে ব্রাজিল। তৃতীয় অবস্থানে আছে জার্মানি। এরপর অন্য দুটি দেশ। যে চার লাখ বিক্রি হয়েছে তার সিংহভাগই আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের।’
বৃহস্পতিবার আরও দুই লাখ পিস বাজারে আনার পর সেগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখে আরও লুঙ্গি বানানো হবে বলেও জানান তিনি।
ফুটবল বিশ্বকাপ সামনে রেখে লুঙ্গিগুলো বানানো হয় ৬ নভেম্বর। তারপর ১০ নভেম্বর শুরু হয় প্রচার এবং বিপণন। সোশ্যাল মিডিয়াতে এটি প্রচারের দায়িত্বের আছে আমানত শাহ গ্রুপের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মিয়া।
ব্র্যান্ড ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত পাইকারি ব্যবসায়ী। তাই অনেক খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতা লুঙ্গিগুলো সংগ্রহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গেছেন।
‘আর সরাসরি কিনতে আগ্রহীরা আমাদের ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার দিচ্ছেন। আমরা তাদের পাঠিয়ে দিচ্ছি।’
লুঙ্গিগুলোকে আরামদায়ক করতে লিনেন কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান মুজাহিদ। এগুলো তৈরি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির নরসিংদীর কারখানায়।
ফুটবলে ৩২টি দেশ অংশ নিলেও মাত্র পাঁচটি দেশের কেন বানানো হলো, এমন প্রশ্নে মুজাহিদ বলেন, ‘মূলত বাংলাদেশের যেসব দলের সমর্থক বেশি, সেটি বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।’
সোশ্যাল মিডিয়াতে পর্তুগালসহ কয়েকটি দেশের লুঙ্গি তৈরি করতে সমর্থকরা দাবি জানালেও তেমন পরিকল্পনা নেই বলে জানান মুজাহিদ।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ থেকে নয়, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালিরাও এসব লুঙ্গির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের ডিএইচএলের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রতিটি লুঙ্গির দাম রাখা হচ্ছে ৩৭০ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে ডেলিভারি চার্জ। ঢাকার ঠিকানায় ৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৮০ টাকা করে ডেলিভারি চার্জ দিতে হবে ক্রেতাদের।
এই লুঙ্গি কিনতে আগ্রহী ব্যক্তিদের নির্ধারিত ওয়েব অ্যাড্রেসে গিয়ে অর্ডার দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অথবা ফেসবুক থেকে আমানত শাহ লুঙ্গি পেজে গিয়েও কেনা যাবে পছন্দের দেশের জার্সির আদলে লুঙ্গি।