বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হ্যালোইনের সঙ্গে মিষ্টিকুমড়ার সম্পর্ক কোথায়

  • সাবিহা ইশরাত জাহান স্টেলা, মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র   
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:২৮

শরতের বিদায় ও শীতের আগমনী যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ‘ফল’ নামে পরিচিত, এই সময়টায় কুমড়া শুধু হ্যালোইনের জন্যই নয়। ‘থ্যাংকস গিভিং’ উৎসবেরও অন্যতম প্রধান উপাদান।

পশ্চিমে তা উত্তর আমেরিকা হোক অথবা ইউরোপ, হ্যালোইন এক জনপ্রিয় উৎসব। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ দিনটায় পালিত হয় উৎসবটি, যা হয়তো পুবের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও যোগাযোগের নানামুখী প্রসারের কারণে এখন আমরা সবাই জানি।

এই হ্যালোইন উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ বলা যেতে পারে মিষ্টিকুমড়া। হ্যালোইনের সঙ্গে এর যোগসূত্র কোথায়? এ নিয়ে কী ধরনের জনশ্রুতিই বা প্রচলিত আছে জেনে নেয়া যাক।

সেপ্টেম্বর মাস থেকেই পশ্চিমের খামারগুলোয় শুরু হয় কুমড়া প্রদর্শনী। উত্তর আমেরিকার খামারিরা নিজেদের খামারে উৎপাদিত কুমড়া তো প্রদর্শন করেনই, সঙ্গে থাকে কে কত বড় ফলাতে পেরেছে, কার্ভিং বা নকশা কাটা, এটি দিয়ে তৈরি খাবারের প্রতিযোগিতাও। পুরো বিষয়টাই যুক্তরাষ্ট্রের খামারগুলোয় ‘পাম্পকিন প্যাচ’ নামে পরিচিত।

পাম্পকিন প্যাচের অন্যতম একটি কর্মকাণ্ড হলো কুমড়া তোলার প্রতিযোগিতা। সামান্য অর্থের বিনিময়ে এতে অংশ নেয়া যায়। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুদের জন্য বিনে পয়সায়ও এ আয়োজন করে থাকে।

বলে রাখা ভালো, আমাদের দেশে মিষ্টিকুমড়া সবজি হিসেবে পরিচিত হলেও, পশ্চিমে কিন্তু এটি ফল হিসেবে পরিচিত।

আমেরিকান শ্বেতাঙ্গদের বৃহদাংশের পূর্বপুরুষ এসেছে আয়ারল্যান্ড থেকে। তাই হ্যালোইন এবং মিষ্টিকুমড়ার সঙ্গে আইরশিদের একটি সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। সেখানে নাকি স্টিঞ্জি জ্যাক নামে এক মাতাল বাস করত। যে কিনা একবার শয়তানকে মদ্যপানের দাওয়াত দিয়ে বসে।

স্বয়ং শয়তানকে মদ্যপানের আমন্ত্রণ জানানো তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। তাই জ্যাক ফন্দি আঁটে কীভাবে তাকে ধোঁকা দেয়া যায়। কিন্তু যথারীতি শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে মৃত্যু হয় তার।

স্বর্গদ্বারে প্রবেশের মুহূর্তে তাকে জানানো হয়, মদ্যপান ও কিপটেমির জন্য সে কোনোভাবেই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না। ওদিকে প্রতিশোধের প্রস্তুতি নিয়ে বসে থাকা শয়তান তাকে নরকেও আশ্রয় দেয় না। বদলে জ্যাকের আত্মাকে একটি শালগমের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেরত পাঠানো হয় পৃথিবীতে। সেই শালগম আকারে সে যেকোনো অশুভকে প্রতিহত করে আসছে হাজার বছর ধরে-এমনটাই প্রচলিত রয়েছে।

কালের বিবর্তনে শালগমের ‘অল হ্যালোস ডে’ বা ‘হ্যালোইন’ উৎসবে ভূত তাড়াতে বিশেষ আকৃতিতে কুমড়াকে নকশা করে রেখে দেয়া হয় বাড়ি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে। ওই বিশেষ নকশার কুমড়ার ভেতরে আলো জ্বালালে তা আবার ‘স্টিঞ্জি জ্যাক ল্যান্টার্ন’ নামেও পরিচিত হয়।

যদিও শরতের বিদায় ও শীতের আগমনী যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ‘ফল’ নামে পরিচিত, এই সময়টায় কুমড়া শুধু হ্যালোইনের জন্যই নয়। ‘থ্যাংকস গিভিং’ উৎসবেরও অন্যতম প্রধান উপাদান।

এ-সংক্রান্ত একটি মিথ বা শ্রুতি জানা গেল যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড রাজ্যের ‘বগার্স অরচোর্ড’ গিয়ে। এক খামারি বললেন, যে বছর যত দ্রুত কুমড়ার রং গাঢ় কমলা হবে শীত নাকি ততই বেশি পড়বে।

ফার্মঘুরে জাতভেদে কুমড়াগুলোর নানা মজার নামও জানা গেলো। যেমন ‘হোয়াইট মিস্টিক পাম্পকিন’ অথবা ‘মিস্ট্রি অব অরেঞ্জ’। যার বাংলা করা যেতে পারে রহস্যময় সাদা কুমড়া বা কমলার রহস্য। খামারিরা নিজেদের ইচ্ছেমতোই নামকরণ করে থাকে।

এ মুহূর্তে পশ্চিমের বাড়ি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নানা রঙের কুমড়ায় সেজে আছে। কুমড়ার নকশাগুলোই বুঝিয়ে দিচ্ছে কোনটি হ্যালোইন আর কোনটি থ্যাংকস গিভিং-এর চিহ্ন বহন করছে।

৩১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় হ্যালোইন দিবসটি ছুটির দিনও। অনেকের কাছেই আবহাওয়ার কারণে এই দিনটি বড়দিনের চেয়েও জনপ্রিয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।

এ বিভাগের আরো খবর