শিশুর মস্তিষ্ক ভালোভাবে বেড়ে উঠুক এবং সে প্রখর স্মৃতিশক্তি পাক- সেটা কে না চায়। তবে চাইলেই তো আর হবে না। শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য তাকে দিতে হবে কিছু বিশেষ খাবার। দুষ্প্রাপ্য নয়, এই খাবারগুলো আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে। চলুন জেনে নেই সেগুলো কী।
শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে ডিম
ডিম একটি আদর্শ খাবার। এতে আছে প্রোটিন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিংক, আয়রনসহ আরও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল। শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে এই উপাদানগুলো কাজ করে বলে তার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ভালো ফলাফলের জন্য শিশুকে দিনে দুটি ডিম খাওয়াতে পারেন। সিদ্ধ, পোঁচ কিংবা ভাজা, যেকোনোভাবে খাওয়ালেই উপকার পাওয়া যাবে।
গ্রিক দই মস্তিষ্ক গঠনে কাজ করে
মস্তিষ্ক গঠনে প্রোটিনের ভূমিকা অনেক। ১০০ গ্রাম গ্রিক দইয়ে প্রায় ৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা সাধারণ দইয়ের থেকে প্রায় তিনগুণ বেশি। তাছাড়া গ্রিক দইয়ে আছে ফ্যাট। তাই প্রতিদিন শিশুকে গ্রিক দই খাওয়ালে মস্তিষ্কের গঠন দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে পালংশাক
পালংশাককে খাদ্য বিশেষজ্ঞরা সুপার ফুড নামে ডাকতে ভালোবাসেন। কারণ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রোটিন ২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২.৮ গ্রাম, আঁশ ০.৭ গ্রাম, আয়রন ১১.২ মি. গ্রাম, ফসফরাস ২০.৩ মি. গ্রাম, অ্যাসিড (নিকোটিনিক) ০.৫ মি. গ্রাম, রিবোফ্লোবিন .০৮ মি. গ্রাম, অক্সালিক অ্যাসিড ৬৫২ মি. গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৩ মি. গ্রাম, পটাশিয়াম ২০৮ মি. গ্রা, ভিটামিন-এ ৯৩০০ আই. ইউ, ভিটামিন সি ২৭ মি. গ্রা, থায়ামিন .০৩ মি. গ্রা থাকে। এসব উপাদান শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে কাজ করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। তাই শিশুর পাতে নিয়মিত পালংশাক রাখুন।
মাছ একটি আদর্শ খাবার
মাছে আছে ভিটামিন ডি এবং ওমেগা থ্রিএস। এই খাদ্য উপাদানগুলো মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতাকে ধরে রাখে এবং স্মৃতিশক্তি কমতে বাধা দেয়। সামুদ্রিক মাছ যেমন- স্যালমন, টুনা ও সার্ডিন মাছ ওমেগা থ্রিএস-সমৃদ্ধ। মনে রাখবেন, যত বেশি ওমেগা থ্রিএস খাবে, শিশুর মস্তিষ্ক তত বেশি দক্ষতা দেখাবে।
বাদাম ও বীজ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
চীনা বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, আখরোটসহ সব ধরনের বাদাম থেকে মস্তিষ্ক উপকার পায়। মোটামুটি সব বাদামেই কমবেশি আছে ক্যালোরি, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন ই, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, কপার, ম্যাংগানিজ ইত্যাদি। এসব উপাদান মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে এবং কর্মক্ষম করে তোলে। বাদামের পাশাপাশি সূর্যমুখী ফুলের বীজ, কুমড়ার বীজ শিশুকে দিতে পারেন। এগুলোও শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য উপকারী।
ওটমিল থেকে বুস্ট পাবে স্মৃতিশক্তি
ওটমিল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর নাশতা। সকালে আপনার শিশুকে ছোট্ট এক বাটি ওটমিল খাওয়াতে পারলে তার স্মৃতিশক্তি বুস্ট পাবে। ওটমিলে থাকা লেসিথিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, বি ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, ফ্যাট ও প্রোটিন শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে ভূমিকা রাখবে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াবে।