ইউরোপে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়েছে যৌনবাহিত রোগ- সিফিলিস। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের যৌনকর্মীরা। এই অবস্থায় দেশটিতে হুমকিতে পড়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো পেশাটি।
সিফিলিস মূলত পেলিডাম দ্বারা সৃষ্ট একটি যৌনবাহিত রোগ। সংক্রমণের প্রাথমিক পথ যৌন সংস্পর্শ; এ ছাড়া রক্ত পরিসঞ্চালন, চুম্বন, চামড়ায় আঘাত এবং গর্ভাবস্থায় বা জন্মের সময় মায়ের কাছ থেকে ভ্রূণে সংক্রমিত হতে পারে।
যৌনকর্মী থেকে যৌন শিক্ষাবিদ বনে যাওয়া লিয়ান ইয়ং বলেন, ‘যদিও এটা ভয়ঙ্কর, তবে এই দুর্যোগে যুক্তরাজ্যের যৌনকর্মীদের এক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাদের এখন পেশাদার আরচণ করা উচিত। সেক্স ইন্ড্রাস্টির নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়ে আওয়াজ তুলতে হবে।’
ইয়াং আটজন যৌনকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন এই রোগ নিয়ে, যারা সিফিলিস আতঙ্কে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন।
ইয়াং বলেন, ‘তারা রোজগার হারাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে সবাইকে একত্রিত হতে হবে। এতেই মিলবে সমাধান।
‘কয়েক বছর ধরেই একটি ইউনিয়ন চাইছে এ পেশায় জড়িতরা। যুক্তরাজ্যে এ ধরনের একটি ইউনিয়ন গড়ে তুলতে ইউএস ইউনিয়ন দ্য অ্যাডাল্ট পারফরম্যান্স আর্টিস্ট গিল্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালানা ইভান্সের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি।’
ঢালাও স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে পেশাদার যৌনকর্মীদের সুরক্ষা দেয়া সবচেয়ে সহজ সমাধান। আমেরিকা ও ইউরোপের যৌনকর্মীদের ৭ বা ১৪ দিন পরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তবে যুক্তরাজ্যে ২৮ দিন পর পর এই পরীক্ষা হয়।
ইউরোপের দেশটিতে সিফিলিস দ্রুত ছড়িতে পড়তে পারে বলে উদ্বেগে আছেন লিয়ান ইয়ং। তিনি বলেন, ‘যৌনকর্মীরাও মানুষ। তাদের উচিত, পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড এবং পুলিশের সঙ্গে শক্ত যোগাযোগ স্থাপন করা। আর এ জন্য প্রয়োজন একটি ইউনিয়ন।’
যুক্তরাষ্ট্রের যৌনকর্মীর স্বাস্থ্যের তথ্য সংগ্রহে রাখে পাস নামে একটি সংস্থা। এটি জানায়, ইউরোপে সিফিলিসে আক্রান্ত কয়েকজন যৌনকর্মীর তথ্য পেয়েছে তারা। সেক্স ইন্ড্রাস্টির খবর ছাপানো প্রকাশনা সংস্থা Xbiz-এ গত সপ্তাহে একটি সতর্কতাও দেয়া হয়েছিল।
ইউরোপে এসটিডি পরীক্ষার মান অতোটা ভালো না। অন্যদিকে পাস আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপে কাজ করে না। এ জন্য তাদের কাছে যৌনরোগে আক্রান্তদের সঠিক হিসাব রাখা সম্ভব হয় না।
ইউনিয়ন গড়ে অবশ্য এসটিডি প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর নিশ্চয়তা নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিএসডি) সেপ্টেম্বরে জানায়, গত বছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেড়েছে তাদের দেশে সিফিলিসে আক্রান্ত।