বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুর্গাপূজার উত্তাপ শাঁখারীবাজারে

  •    
  • ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:৫৩

দুর্গাপূজার জন্য প্রায় ১০০ ধরনের উপকরণ প্রয়োজন হয়। আর পূজা-অর্চনার সব উপকরণই মেলে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে। এসব উপকরণ কিনতে অনেকে দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন এখানে। সে সুবাদে পূজার কেনাকাটার সবচেয়ে বড় বাজার ঐতিহ্যবাহী শাঁখারীবাজারে নেমেছে ক্রেতার ঢল।

কাশফুল আর স্বচ্ছ নীল আকাশে ধবল মেঘের ভেলা জানান দেয় দরজায় কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। ১ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব।

এই উৎসব উপলক্ষে কেনাকাটায় জমজমাট হয়ে উঠেছে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার। কেনাকাটার এই ভিড় শারদীয় দুর্গোৎসব শুরুর আগে থেকেই রঙ ছড়াচ্ছে শাঁখারীবাজারে।

পূজার জন্য প্রায় ১০০ ধরনের উপকরণ প্রয়োজন হয়। আর পূজা-অর্চনার সব উপকরণই মেলে এখানকার দোকানগুলোতে। এসব উপকরণ কিনতে অনেকে দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন এখানে। সে সুবাদে পূজার কেনাকাটার সবচেয়ে বড় বাজার পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শাঁখারীবাজারে নেমেছে মানুষের ঢল।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিমার সাজসজ্জা থেকে শুরু করে মুকুট, শাড়ি, অলংকার, লেস, সিঁদুর, ফুলের মালা, প্রতীকী অস্ত্র ও ঘট কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। প্রতিমার সাজ-পোশাক, জরি-চুমকিসহ মাঙ্গলিক সামগ্রী বিক্রির ধুম পড়েছে শাঁখারীবাজারের দোকানগুলোতে। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত চলছে বিকিকিনি। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

পূজা উপলক্ষে ঢাকার আশপাশের বিক্রেতারাও বিভিন্ন জিনিস পাইকারি দরে কিনে নিচ্ছেন। এ ছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পুরো পরিবারসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এসে কেনাকাটা করছেন।

উৎসবের রঙে দেবী বরণে সিঁদুর, আলতা, টিপের কেনাকাটাও বেড়েছে এখানে। দোকান ঘুরে ঘুরে ক্রেতারা কিনছেন এসব। সঙ্গে কেউ কেউ কিনছেন বাচ্চাদের খেলনাও।

অনেকে এসেছেন মায়ের অঞ্জলি ও পূজার অর্ঘ্য দেওয়ার আগরবাতি, ঘট, প্রদীপ, থালাসহ অন্যান্য উপকরণ কিনতে।

বেচাকেনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী খুশি এবারের পূজার বাজার নিয়ে।

শ্রী দেব নামে এক দোকানি জানালেন, রাঁধা কৃষ্ণ ও শিব প্রতিমা বেশি কিনছেন ভক্তরা। বাসাবাড়ির জন্য এগুলো নিচ্ছেন তারা।

দুর্গাপূজার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ১০০ ধরনের উপকরণই মেলে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে। ছবি: নিউজবাংলা

ভিড় বেড়েছে শাঁখার দোকানগুলোতেও। সারা বছর শাঁখা পরলেও দুর্গাপূজার সময় নতুন শাঁখা চাই। কারিগর বিমল বলেন, চিকন শাঁখার দিকে চাহিদা বেশি এ বছর।

দেবী দুর্গার সাজ-পোশাক কিনতে আসা সুদেব রায় বলেন, ‘দুর্গা মায়ের সাজ-পোশাকের সবকিছুই শাঁখারীবাজারে পাওয়া যায়। অনেক দোকান। তাই বেশি ঘুরতে হয় না। তুলনামূলক দামও কম। তবে এ বছর দোকানিরা দাম একটু বেশি নিচ্ছেন।’

দাম বেশি নেওয়ার কথা স্বীকার করে বিক্রেতারা বলছেন, খরচ বেড়েছে, তাই খুচরা দামও সামান্য বেড়েছে।

কেনাকেটা করতে ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন বিধান চক্রবর্তী। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পূজার মুকুট, শাড়ি, গয়না, চূড়া এসব কিনে নিচ্ছি। বরাবরই পূজার সামগ্রী কেনাকাটা করতে এখানে আসি।’

নারায়ণগঞ্জ থেকে গোপীনাথ দও এসেছেন মন্দির কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে। তিনি জানালেন, শাঁখারিবাজার থেকে কেনাকাটা তাদের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। আর এখানে একসঙ্গে সব উপকরণ পাওয়া যায় এবং দামও বেশ সাশ্রয়ী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক জানান, দুর্গাপূজার আরাধনায় প্রায় ১০০ উপকরণ লাগে। এগুলো ছাড়া পুরোহিতরা পূজাই করতে চান না। তাই পূজার আগে সব উপকরণ গুছিয়ে রাখা আয়োজকদের অন্যতম প্রধান কাজ।

তিনি বলেন, ‘দুর্গাপূজা শুরু হয় মহাষষ্ঠীর কল্পারম্ভ দিয়ে। এরপর আসে বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। পরে শুরু হয় সপ্তমীর নবপত্রিকা স্নান ও মহাস্নান, অষ্টমী পূজা, সন্ধিপূজা, নবমী পূজা ও দশমী পূজা। প্রতিটি ধাপে কিছু নতুন নতুন উপকরণ সংযোজন হয়। তাই দুর্গাপূজার কেনাকাটার ফর্দ বিশাল হয়ে থাকে।’

এবারের দুর্গাপূজা ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু হবে। শেষ হবে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে।

এ বিভাগের আরো খবর