করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ আড়াই বছর বন্ধ রাখার পর আবার পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দিল পাহাড়, নদী আর ঝরনার মিতালিতে সৃষ্ট প্রকৃতির এক অপরূপ নিদর্শনের দেশ ভুটান।
আগের চেয়ে পর্যটন ফি বা সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি (এসডিএফ) বেশ বাড়িয়ে শনিবার দেশটির সীমান্ত খুলে দেয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভুটানে গত তিন দশক ধরে প্রতি রাতের জন্য একজন পর্যটককে দিতে হতো ৬ হাজার ৭৫০ টাকা। তবে এখন থেকে এ জন্য গুনতে হচ্ছে ২০ হাজার ৭৫০ টাকা।
ভ্রমণের জন্য এত দিন আঞ্চলিক অর্থাৎ ভারতীয় ও বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য কোনো ফি ছিল না। কিন্তু নতুন নিয়মে তাদের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসব দেশের পর্যটকদের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন দিতে হবে ১৫৩০ টাকা। আর ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য ৭৬৫ টাকা লাগবে।
ভুটানের কনসাল জেনারেল জিগমে থিনলে নামগিয়াল বলেন, ‘পর্যটন একটি জাতীয় সম্পদ এবং আমরা কার্বন নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছি। এর নিজস্ব খরচ আছে। আমাদের পর্যটনকে টেকসই করতে আমরা আমাদের অবকাঠামোর উন্নয়ন করছি। এসব কারণে আমরা এই শুল্ক নিচ্ছি।’
পৃথিবীতে পর্যটকদের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি মাশুল দিতে হয় ভুটান তার মধ্যে অন্যতম। জলবিদ্যুতের পর পর্যটনই দেশটির রাজস্বের সবচেয়ে বড় খাত।
সড়কপথে বাংলাদেশ থেকে ভুটান গেলে দেশটির অভিবাসন দপ্তর থেকে এন্ট্রি পারমিট নিতে হয়। আর বিমানে গেলে নিতে হয় বিমানবন্দরের পারমিট।
৪৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশ ভুটানের জনসংখ্যা ৮ লাখের মতো। দেশটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ১০০। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এ দেশের সীমান্ত।
ভুটানের ভূপ্রকৃতি পর্বতময়। উত্তরে সুউচ্চ হিমালয় পর্বতমালা, মধ্য ও দক্ষিণ ভাগে নিচু পাহাড় ও মালভূমি এবং দক্ষিণ প্রান্তসীমায় সামান্য কিছু সাভানা তৃণভূমি ও সমভূমি আছে। মধ্যভাগের মালভূমির মধ্যকার উপত্যকাগুলোতেই বেশির ভাগ লোকের বাস।
বহির্বিশ্ব থেকে বহুদিন বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ভুটান প্রাণী ও উদ্ভিদের এক অভয়ারণ্য। এখানে বহু দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়। ভুটানের প্রায় ৭০% এলাকা অরণ্যাবৃত।