নভেম্বরের মধ্যে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদা হল সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। পাঠকদের জন্য পীর হবিবুর রহমান পাঠাগারও খুলে দেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার সারদা হল উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবিতে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের কর্মসূচিতে হাজির হয়ে এমন আশ্বাস দেন মেয়র আরিফ।
১৯৩৬ সালে সিলেট শহরের সুরমা নদীর তীরে চাঁদনীঘাট এলাকায় নির্মাণ করা হয় ‘সারদা স্মৃতি ভবন’। সংস্কৃতি চর্চার বিকাশে সিলেটের একটি ব্যবসায়ী পরিবার ৩৯ শতক জমিতে কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের আদলে সারদা হল নামে মিলনায়তনটি নির্মাণ করে। এরপর থেকে সেখানে গান, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হতো।
২০১২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশনের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তখন সারদা হল ও পাশের পীর হবিবুর রহমান পাঠাগারকে সিটি করপোরেশন অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে। পরে নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরুর পরও এই দুই ভবনের দখল ছাড়েনি তারা। এক পর্যায় সিটি করপোরেশন এগুলো ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার শুরু করে।
সারদা হল সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। মঙ্গলবার তারা আন্দোলনে নামেন।
বিকেলে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সারদা হলের সামনে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশের আয়োজন করে।
নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদী সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত।
মিশু বলেন, ‘সারদা হল সিলেটের সংস্কৃতি চর্চার স্থান, দীর্ঘদিন ধরে সিলেট সিটি করপোরেশন হলটি ভাগাড়ে পরিনত করে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’ প্রতিবাদী কর্মসূচিতে হাজির হন মেয়র আরিফুল হক। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা এই ঐতিহ্য রক্ষা করব। আগামী নভেম্বরের মধ্যে সারদা স্মৃতি ভবন এবং পীর হবিবুর রহমান পাঠাগার খুলে দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস বা মুছে ফেলা কারোরই কাম্য নয়। সারদা স্মৃতি ভবনের সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে এটি চালু করা হবে।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার আরশ আলী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আল-আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল কবির, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন, রকিবুল ইসলাম ঝলক, সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোকাদ্দেছ বাবুল।