গালগল্পের প্রতি প্রকাশ্যে বিরক্তি অনেকেই দেখাই, তবে আমরা সবাই সুযোগ পেলেই কিন্তু গালগল্প করি। গবেষণা বলছে, প্রতিদিন গড়ে একটি মানুষ বেশ বড় সময়ই ব্যয় করে গসিপ বা গালগল্পের পেছনে।
মানুষ দিনে গড়ে আট ঘণ্টা ঘুমালে বাকি ১৬ ঘণ্টার মধ্যে ৫২ মিনিটই গালগল্প করে কাটিয়ে দেয়। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-রিভারসাইডের এই গবেষণায়, পুরুষের তুলনায় নারীর গালগল্পে আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। তবে নারীদের গসিপের বেশির ভাগ জুড়েই থাকে নির্দোষ বিষয়াদি, উল্টোটি ঘটে পুরুষের ক্ষেত্রে।
এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ধনীদের তুলনায় গরিবের গালগল্প করার প্রবণতা কম। আর বেশি বয়সীর চেয়ে তরুণদের নেতিবাচক আলোচনা করার আগ্রহ অনেক বেশি।
সোশ্যাল সাইকোলজিক্যাল অ্যান্ড পার্সোনালিটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। এতে গবেষকরা বলছেন, ‘গালগল্প সবাই করেন এবং এর বিস্তার সর্বব্যাপী।’
গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক মেগান রবিনস। এতে ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সী ৪৬৭ জন অংশ নেন। তাদের মধ্যে ২৬৯ জন ছিলেন নারী, ১৯৮ জন পুরুষ।
অংশগ্রহণকারীদের পোর্টেবল লিসেনিং ডিভাইস পরিয়ে পাঁচটি বিষয়ে গবেষণা চালানো হয়।
দেখা গেছে যে অংশগ্রহণকারীদের কথোপকথনের প্রায় ১৪ ভাগই ছিল গালগল্প। জেগে থাকা ১৬ ঘণ্টার মধ্যে গড়ে তারা প্রায় এক ঘণ্টা এটি করেই কাটিয়েছেন।
প্রায় তিন-চতুর্থাংশ গালগল্প ছিল নির্দোষ ধরনের। আর ইতিবাচক গল্পের (৩৭৬) চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ছিল নেতিবাচক কথাবার্তা (৬০৪টি)।
গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ সাধারণত কাছের লোকজনকে নিয়েই গালগল্প করতে বেশি পছন্দ করে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা এ ধরনের আলোচনা করেছেন ৩ হাজার ২৯২ বার। এ ছাড়া শিক্ষাদীক্ষা ও অর্থ যাদের বেশি তাদের মধ্যে গালগল্পের প্রবণতাও বেশি।
অন্তর্মুখীদের তুলনায় বহির্মুখী মানুষের মধ্যে গালগল্প করার মাত্রা বেশি বলেও বেরিয়ে এসেছে এই গবেষণায়।