যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের এক দম্পতি গত জুনে তাদের ৭৯তম বিয়েবার্ষিকী উদযাপন করেছিল, তারা এখন নিজেদের ১০০তম জন্মদিন একসঙ্গে উদযাপন করছে। হ্যামিল্টনের ইটন রোডে অবস্থিত চার্চ অফ গড-এ গত ২২ জুলাই পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং গির্জার সদস্যদের নিয়ে কেক কাটেন এ দম্পতি।
ফক্স নিউজ ডিজিটালের সঙ্গে একটি ফোন সাক্ষাত্কারে স্বামী হুবার্ট ম্যালিকট বলেন, ‘আমরা আসলে দিন ধরে বাঁচি। এভাবে ১০০-তে পৌঁছে গেছি। ১৯৪১ সালে যখন আমরা প্রথম দেখা করি, তখন ইটন রোড এ চার্চটির একটি ভিন্ন নাম ছিল।’
হুবার্ট ম্যালিকটের জন্ম ১৯২২ সালের ১৩ জুলাই। তার স্ত্রী জুন ম্যালিকট ১০ দিন পর ২৩ জুলাই জন্ম নেন। ১৩০ জন অতিথির সঙ্গে জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন তারা।
১৯৪১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি চার্চে তাদের প্রথম দেখা। প্রার্থনার সময় জুনের ঠিক পেছনের বেঞ্চে বসেছিলেন হুবার্ট। সেদিন জুনের মুচকি হাসিতে মন হারিয়েছিলেন হুবার্ট।
হুবার্ট স্মরণ করছিলেন অনুষ্ঠানের পর কীভাবে তিনি এবং বাকি যুবকরা আইসক্রিম আনতে গিয়েছিলেন, কথা বলেছিলেন। রাস্তার পাশে একটি দোকানে একসঙ্গে একটি আনন্দদায়ক দিন উপভোগ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘ রাস্তায় কোনো গাড়ি ছিল না। আমি মোটামুটি জানতাম কীভাবে কি করতে হবে। তখন গির্জায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
‘রোববার গির্জায় গিয়েছিলাম। সেখানে তাকে দেখতে পাই। আমরা বসে অনেক কথা বললাম। কয়েক সপ্তাহ পর, একটি কাউন্টি মেলায় তাকে ডেটে নিয়ে গিয়েছিলাম। মেলার পর জুনের বাড়িতে যাই।
‘আমি জানতাম না কি করব। বয়স ছিল কেবল ১৯। তাকে লাল রঙের পোশাকে সুন্দর দেখাচ্ছিল। তার কাছে গিয়ে চুমু খেলাম, তারপর জড়িয়ে ধরলাম। চুমোর পর এতটাই ভয় পেয়েছিলাম যে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।’
জুন ম্যালিকট। ছবিটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তোলা।
স্বাভাবিকভাবেই হুবার্টের আকস্মিক চলে যাওয়ায় জুন উদ্বিগ্ন ছিলেন জুন। হুবার্ট যখন ঘুরে জুনের দিকে ঘুরে তাকায়, তখন তার মনে হয়েছিল কিছুই ভুল হয়নি। প্রেম এবং বন্ধুত্বের একটি বছর অনুভব করেছিল তারা।
হুবার্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে যোগ দেন। ইলিনয়ের নেভাল স্টেশন গ্রেট লেকসে নিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ।
নৌবাহিনীর পোশাকে হুবার্ট ম্যালিকট, ১৯৪২ সালে তোলা ছবি
যুদ্ধে যাওয়ার জন্য হুবার্টকে সমর্থন দিয়েছিলেন জুন। সে সময় জুন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।
হুবার্ট বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে কী করা উচিত, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় ছিল। বিয়ের সিদ্ধান্তটা তখনই নেই।’
বিয়ের লাইসেন্সের জন্য সে সময়ে প্রয়োজনীয় প্রাক-বৈবাহিক রক্ত পরীক্ষা করাতে হত। সে জন্য তারা ইন্ডিয়ানা গিয়েছিলেন। সেখানে কাজ সেরে হ্যামিল্টনে ফিরে আসে যুগল। যে চার্চে তাদের প্রথম দেখা ১৯৪৩ সালের ৮ জুন সেখানেই গাঁটছড়া বাঁধেন দু'জনে।
তাদের ঘরে জন্ম নেয় জো, স্যাম এবং থেরেসা নামে তিন সন্তান। এখন সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের ঘরে সাত সন্তান রয়েছে। তাদেরও আছে ১১ সন্তান।
হুবার্ট বলেন, ‘সবসময় বিশ্বাস করি ঈশ্বর যেখানে থাকেন সেটাই সুখী বাড়ি। জীবনটা আসলে উপভোগের। যখনই মানুষ এক সঙ্গে কিছু করে, তখন দারুণ কিছু হয়। বসবাসের জন্য পৃথিবীটা তখন স্বর্গ হয়ে ওঠে।’