নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার ১০ বছর আজ। ১০ বছর ধরে তিনি নেই, কিন্তু কে বলবে তিনি নেই। তার লেখাতেই এখনও মাতোয়ারা পাঠক-দর্শক।
গল্প, উপন্যাস, কবিতা ছাড়াও হুমায়ূনের পদচারণা ছিল নাটক-গান ও সিনেমায়। তাই শিল্প-সাহিত্যের সব অংশেই তিনি বেঁচে আছেন না থেকেও।
আজও অমর একুশে বইমেলার একাধিক প্যাভিলিয়ন সাজে হুমায়ূনকে ঘিরে। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো যেন বারবার ফিরে আসে পাঠকের মনে। হিমু, রুপা, মিসির আলী, শুভ্ররা যেন পাঠকের অনেক কাছের।
হুমায়ূনের গল্প, উপন্যাসের বিভিন্ন ছোট ছোট উক্তি পাঠকের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
যেমন বাদশাহ নামদারে লিখেছেন, ‘রাজা যায়, রাজা আসে। প্রজাও যায়, নতুন প্রজা আসে। কিছুই টিকে থাকে না। ক্ষুধার্ত সময় সবকিছু গিলে ফেলে, তবে গল্প গিলতে পারে না। গল্প থেকে যায়।’
‘এই পৃথিবীতে চোখের জলের মতো পবিত্র তো আর কিছু নেই। এই পবিত্র জলের স্পর্শে সব গ্লানি- সব মালিন্য কেটে যায়।’- কুহক
রজনীতে লিখেছেন, ‘মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচেয়ে বড় কষ্ট হচ্ছে মাঝে মাঝে তার সবকিছু পেছনে ফেলে চলে যেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সে যেতে পারে না। তাকে অপেক্ষা করতে হয়। কিসের অপেক্ষা তাও সে ভালমতো জানে না।’
প্রেম-বিরহ-রাজনীতি নিয়ে এমন আরও অসংখ্য উক্তি আছে যা পাঠকমুখে বেশ জনপ্রিয়।
সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান হুমায়ূন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন তিনি।
আর চলচ্চিত্রে ১৯৯২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে তিনি মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার পেয়েছেন।
২০১১ সালে সেপ্টেম্বরে তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউ ইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে মৃত্যু হয় হুমায়ূন আহমেদের।