ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দেখা মেলেনি প্রত্যাশা অনুযায়ী পর্যটকের। এতে একদিকে যেমন খুশি পর্যটকরা, অন্যদিকে হতাশার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অলস সময় পার করছেন হোটেল-মোটেল মালিক, কর্মী, সৈকতের ফটোগ্রাফার, ঘোড়াওয়ালা, রেস্টুরেন্ট মালিকরা।
হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, প্রতি বছর লাখ খানেক হলেও এবারের ছুটিতে কক্সবাজার এসেছেন হাতে গোনা কয়েক হাজার পর্যটক। বড় হোটেল-মোটেলগুলোর বুকিং হয়েছে ৫০ শতাংশ, মাঝারিগুলোর ২০ শতাংশ।
সৈকতে আসা পর্যটকদের ছবি তোলেন মো. রহিম। এই আয় দিয়েই তার সংসার চলে।
তিনি সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে মাত্র ৫০০ টাকা আয় করেছি। অন্য বার ঈদের প্রথম দিন বিচে লাখো মানুষ আসে। আয় করি ৫ হাজার টাকার বেশি।’
বিচে পাতা ছাতাওয়ালা চেয়ারের ব্যবসা করেন লালু। সৈকতে তার ৩০টি চেয়ার পাতা আছে। ঈদের দিন থেকে তার সবগুলো চেয়ারই ফাঁকা।
তবে লালুর আশা, মঙ্গলবার থেকে পর্যটক বাড়বে, ব্যবসাও হবে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে আসা সোয়েব আহমেদ বলেন, ‘এবার আট দিনের টানা ছুটি পেয়েছি। তাই প্রিয়জনকে নিয়ে তিন দিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরতে এসেছি। ফাঁকা সৈকতে ঘুরে বেশ মজা পাচ্ছি।’
সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘ফাঁকা সৈকতে মনের আনন্দে গোসল করছি। মানুষের কোনো ভিড় নেই। দারুণ ঘুরছি। খাবারদাবার আর রুম ভাড়াও এখন অনেক কম।’
সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে পর্যটকরা আনন্দে মেতে উঠলেও তাদের নিরাপত্তায় দেখা যায়নি লাইফ গার্ড কর্মীদের।
তবে ট্যুরিস্ট পুলিশের দাবি, প্রতিটি পয়েন্টেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক আয়ুব আলী বলেন, ‘পর্যটক অনেক কম কিন্তু নিরাপত্তার দিক দিয়ে আমাদের কোনো ধরনের ছাড় নেই। প্রতিটি পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’
করোনার বিধিনিষেধের কারণে গত দুই বছর পর্যটক পায়নি হোটেল কক্স টুডে। এবারের কোরবানি ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আশা করে হতাশ হয়েছেন হোটেলটির মহাব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ।
ভিসতা বে হোটেলের ব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়াল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ঈদের ছুটিতে তেমন চাপ নেই বললেই চলে। যা কল পাচ্ছি, তা স্বাভাবিক। বড় হোটেলগুলোতে ৫০ শতাংশ পর্যটক এলেও আমাদের আছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। এরপরও ধারণা করছি, ১২ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত লাখো পর্যটক কক্সবাজারে আসবে।
‘তবে আবার যদি করোনা সংক্রমণ বাড়ে তাহলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি। তা ছাড়া অনেকে হয়তো পদ্মা সেতু দিয়ে কুয়াকাটার দিকে গেছে। এই আশঙ্কাও করছি। বড় সংকটে আছি আমরা।’
ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম ঘটবে ভেবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ সব সময় টহল দিচ্ছে। সৈকতে পর্যটকদের জন্য খাবার পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মেহেদী বলেন, ‘প্রতি ঈদে র্যাব তার নিজস্ব ধরন অনুযায়ী নিরাপত্তা দেয়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টহল জোরদার করা হবে।’