যেকোনো বয়সেই ত্বকে ক্যানসার হতে পারে। গবেষণা বলছে, এর জন্য সূর্যের আলো অনেকটা দায়ী। তবে শৈশব এবং বয়ঃসন্ধিকাল ত্বকের ক্যানসার হওয়ার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ শিশু থেকে শুরু করে ২০ বছর পর্যন্ত বয়সীরা রোদের সংস্পর্শে বেশি আসে।
শুধু শিশু বা কিশোর বয়সে রোদে পোড়া মেলানোমা অর্থাৎ ত্বকে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি দুই গুণ বাড়িয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে এই ক্যানসার সবচেয়ে মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
গবেষণা আরও বলছে, প্রখর সূর্যের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় ত্বকের ক্যানসারের হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি, যা যুক্তরাজ্য এবং আমেরিকার তুলনায় এটি প্রায় দ্বিগুণ। ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য মেলানোমা এতটাই সাধারণ হিসেবে ধরা হয় যে এটি তাদের ‘জাতীয় ক্যানসার’ হিসেবে পরিচিত।
তবে দেশটি ত্বকের ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যা থেকে অন্যান্য দেশ শিক্ষা নিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেখানকার পরিবারগুলোকে অতিবেগুনি রশ্মি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং তা থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার ক্যানসার কাউন্সিল ভিক্টোরিয়ার প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাস্টিন অসবর্ন বলেছেন, ‘শরীরের সুস্থ কোষ ইউভি ডিএনএকে হত্যা করে। ইউভির অনুপস্থিতিতে কোষগুলো আবার সক্রিয় হয়। তবে ক্রমাগত ইউভির সংস্পর্শে আসলে কোষগুলো সক্রিয় হতে পারে না। তখনই ত্বকের ক্যানসার হয়।
২০১৯ সালে বিশ্বে ৬.৭ মিলিয়ন মানুষ ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত হয় এবং ১ লাখ ১৮০০০ জন মারা যায়।
শিশুদের ত্বকের সুরক্ষা
যদিও সানস্ক্রিন প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও দিতে পারে, তবে শিশুদের রোদ থেকে সুরক্ষার জন্য অন্য উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
ক্যানসার কাউন্সিল অনুসারে, ছয় মাস বা তার কম বয়সী শিশুর জন্য কখনই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত নয় এবং এক বছরের কম বয়সী শিশুকে সরাসরি ইউভি রশ্মির সংস্পর্শে আনা উচিত নয়।
তার বদলে শিশুদের জন্য হালকা,ঢিলেঢালা পোশাক এবং একটি নরম টুপি পরানো ভালো।
বাচ্চাদের রোদে পোড়া বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ তাদের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা শিশুদের জন্য তৈরি করা সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেন এবং প্রথমে ত্বকের একটি ছোট অংশে ক্রিমটি লাগিয়ে দেখতে বলেন কোনো অ্যালার্জি দেখা যায় কি না। যদিও সানস্ক্রিন থেকে অ্যালার্জি হওয়ার ঘটনা বিরল।
হেন্ডারসন বলেছেন, ‘সানস্ক্রিন কখনও শেষ সুরক্ষা নয়। যখন ত্বক রক্ষা করার অন্য কোনো উপায় না থাকে, তখন এটিকে শেষ অবলম্বন হিসেবে ভাবা উচিত।’