খুলনা অঞ্চলের এক জনপ্রিয় খাবার চুইঝাল দিয়ে রান্না করা গরুর মাংস। দেশের অন্যান্য এলাকায়ও আছে এর জনপ্রিয়তা। মাংসে বাড়তি স্বাদ যোগ করে এই মসলা।
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে চুইঝালের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে দামও।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, অন্যান্য সময় বাগেরহাটে প্রতি কেজি চুইঝাল ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়।
লতাজাতীয় গাছ চুইয়ের কাণ্ড ধূসর, পাতার আকৃতি পানপাতার মতো, রংও সবুজ। কাণ্ডের স্বাদ বেশ ঝাল। চুইয়ের শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল, ফলের আছে ভেষজ গুণ। তবে এটি সবচেয়ে ব্যবহার করা হয় মসলা হিসেবে। গরু ও হাঁসের মাংসে চুইয়ের কাণ্ড দেয়া হয়।
চুইঝাল বিক্রেতা তালিম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চাষি, গৃহস্থ ও পাইকারদের কাছ থেকে আমরা চুইঝাল কিনি। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সবাই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণ সময়ে আমি প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ কেজি চুইঝাল বিক্রি করি। ঈদের সময় বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ কেজি।
‘আগে যেসব ছোট, চিকন চুইঝাল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় এবং কিছুটা বড়গুলো ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন সেসব বিক্রি করতে হচ্ছে সাইজভেদে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়।’
চুইঝাল দিয়ে রান্না করা গরুর মাংস খেতে ভালোবাসেন স্থানীয় মোল্লা মাসুদ।
তিনি বলেন, ‘চুইঝাল ছাড়া গরুর মাংসের স্বাদ পুরোপুরি পাওয়া যায় না। ঈদের সময় চুইঝাল দিয়ে রান্না করা গরুর মাংস আমার খুবই প্রিয়। তাই দাম একটু বেশি নিলেও কোরবানির মাংসের জন্য চুইঝাল কিনলাম।’
ফকিরহাট উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের মো. মামুন জানান, চুইঝালের গাছ পরিণত হতে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লাগে। চুইঝাল সংগ্রহের জন্য পুরো গাছটিই কেটে নেয়া হয়।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোরবানির ঈদ উপলক্ষে চুইঝালের চাহিদা বেড়েছে। এ বছর জেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে চুইঝাল চাষ করা হয়েছে। এ থেকে প্রায় ৩০ টন চুইঝাল উৎপাদন হয়েছে, যার বাজারমূল্য দেড় কোটি টাকার বেশি।
‘এখন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক দুইভাবেই চুইঝালের চাষ বাড়ছে। দেশের অন্যান্য জেলার মানুষের কাছেও এর জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে।’