করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দুই বছর বিধিনিষেধ থাকার পর এবার স্বাভাবিক পরিবেশে পলিত হচ্ছে পবিত্র হজ। শুক্রবার হজের মূল আনুষ্ঠানিকতায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন মুসল্লিরা।
সারা বিশ্বের ১০ লাখ মুসল্লির ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক্, লা শারিকা লাক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান।
আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা। মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেয়া হবে। হজের আরবি খুতবা শোনা যাবে বাংলাসহ ১৪টি ভাষায়।
সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতে অবস্থানের পর মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা। রাতে সেখানে খোলা মাঠে অবস্থান করে শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন তারা।
মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে মিনায় ফিরবেন হাজিরা। মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে গোসল করে সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন তারা। পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।
এরপর কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ করে আবার মিনায় যাবেন মুসল্লিরা। পরে মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। মক্কায় বিদায়ি তাওয়াফ করার পর দেশে ফিরবেন হাজিরা।
এর আগে ৬ জুলাই পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় কাবা তওয়াফের মধ্য দিয়ে হজ কার্যক্রম শুরু করেন। এবার করোনার বিধিনিষেধের কড়াকড়ি না থাকায় বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারী মাস্ক ছাড়া হজে যোগ দিয়েছেন।
মক্কায় মসজিদুল হারাম চত্বরে স্বর্ণালি হরফ খচিত কালো কাপড়ে আবৃত পবিত্র কাবাঘরের ‘তওয়াফ’ এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও দোয়া চাওয়ার মাধ্যমে হজের প্রথম আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে হজে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল সৌদি সরকার। ২০২০ সালে সৌদি আরবে বাসকারী মাত্র এক হাজার মানুষ পেয়েছিল হজের অনুমতি। গত বছর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় অনুমতি পেয়েছিলেন ৬০ হাজার মুসল্লি।
এবার বিশ্বের অন্তত ১০ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন হজে। চলতি বছরের জুলাই থেকে বিদেশি তীর্থযাত্রীর জন্য গণটিকা প্রচার অভিযান চালিয়েছিল হজ কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, এবার মোট অংশগ্রহণকারীর ৮৫ শতাংশই বিদেশি নাগরিক।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হজ। তবে এটি কেবল তাদের জন্যই প্রযোজ্য যাদের সৌদিতে এসে করার সামর্থ্য আছে। ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন হজে।
আরব নিউজ, সৌদি গেজেট অবলম্বনে