ঈদুল আজহার বাকি আর দুই দিন। রাজধানী ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাতের জন্য এরই মধ্যে প্রায় প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর বন্ধ ছিল জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ। করোনার সে শঙ্কা কাটিয়ে ঈদ উল ফিতরের পর এবার ঈদুল আজহার ঈদ জামাত এ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ত্রিপল দিয়ে পুরো মাঠ ঢেকে দেয়া হয়েছে। পানিরোধক শামিয়ানা দিয়ে উপরের ছাউনি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে মাঠের ভেতরের অংশ।
চলছে শেষ সময়ে ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে সাজ সজ্জার কাজ। স্থাপন করা হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেম। মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ঈদগাহ ময়দানের ভেতরসহ পুরো ঈদগাহ জুড়ে নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
করোনার রেশ কাটিয়ে গত রোজার ঈদে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এই ময়দানে। এরপর ঈদুল আজহার জন্য গত মাস থেকে লাখো মুসল্লির ঈদ জামাতের জন্য বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। ঈদগাহের মাঠ ছাড়াও আশপাশের এলাকা তথা হাইকোর্ট মাজার, কদম ফোয়ারাসহ সব জায়গায় রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হচ্ছে।
ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বলতে পারেন ঈদগাহ ময়দান প্রায় প্রস্তুত। এখন শুধু নিচে কার্পেটিং এবং সাদা চাদর বিছানোর কাজটুকু বাকি। এটুকু মূলত ঈদের আগের দিন করা হয়। তা ছাড়া বাকি সব কাজই আমাদের প্রায় শেষের দিকে।’
তিনি বলেন, ‘গত মাস থেকে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন দেড়শ লোক মাঠ প্রস্তুতির জন্য কাজ করছেন। গত রমজানে এখানে নামাজ আদায় হয়েছে। আশা করি আবহাওয়া ভালো থাকলে এখানে ঈদের নামাজ সুন্দরভাবেই হবে।’
জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেন। পাশাপাশি নারীদের জন্যও পৃথক নামাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
করোনায় বিভিন্ন বিধিনিষেধে দুই বছর নামাজ আদায় বন্ধ ছিল জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম না করার নির্দেশনা থাকায় এখানে জামাত আদায় হয়নি। গত দুই বছর মসজিদে সময় ভাগ করে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত ১৯ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণকল্পে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া আবহাওয়া প্রতিকূল বা অন্য কোনো অনিবার্য কারণে এ জামাত অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।