বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাতৃত্বকালীন বিষণ্ণতা, পাশে থাকা জরুরি

  •    
  • ২৯ জুন, ২০২২ ২২:০৫

পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন কখনই চারিত্রিক সমস্যা কিংবা মায়েদের ইচ্ছাকৃত নয়। দেশের বেশির ভাগ পরিবার অবশ্য এ জন্য মায়েদের দায়ী করে থাকে। এটি কেবল প্রসব-পরবর্তী অন্য সব সমস্যার মতোই একটি জটিলতা। চিকিৎসায় পুরোপুরি সেরে ওঠা যায়।

সন্তান প্রসবের পর ইমোশনাল এবং হরমোনাল এক সাইক্লোন বয়ে যায় মাতৃমনে। মানে আনন্দ, ভয় এবং আতঙ্কের এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করে তখন। এর পরিণতি হতে পারে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা!

বিষণ্ণতা শব্দটি আমাদের চারপাশে হরহামেশা শোনা যায়। সবাই আমরা কম-বেশি বিষণ্ণতায় ভুগছি।

নানা কারণে বিষণ্ণতায় ভোগে মানুষ। একেকজনের একেক কারণ। এর ফলে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।

তবে সন্তান প্রসবের পর বেশির ভাগ মায়েরা এক ধরনের বিষণ্ণতায় ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তা ‘মাতৃত্বকালীন বিষণ্ণতা’ নামে পরিচিত।

বেশির ভাগ মা প্রসবের পর ‘বেবি-ব্লু’-তে আক্রান্ত হন; যা সাধারণত মুড সুইং। এটা মূলত অকারণে কান্নাকাটি করা, আতঙ্কিত বা শঙ্কিত হওয়া, ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার মতো বিষয়গুলোতে সীমাবদ্ধ থাকে। এটি সাধারণত প্রসবের ২-৩ দিন পর শুরু হয়ে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

কিছু মায়ের ক্ষেত্রে তা আরও দীর্ঘ হয়ে থাকে। তারা আরও মারাত্মক বিষণ্ণতায় (সিভিয়ার ডিপ্রেশন) ভোগেন, যাকে পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন বলা হয়। এর থেকে আরও মারাত্মক একটা কনসিকোয়েন্স হতে পারে, যাকে মেডিক্যাল ভাষায় ‘পোস্টপারটাম সাইকোসিস’ বলা হয়।

পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন কখনই চারিত্রিক সমস্যা কিংবা মায়েদের ইচ্ছাকৃত কোনো কাণ্ড নয়। দেশের বেশির ভাগ পরিবার অবশ্য এ জন্য মায়েদেরই দায়ী করে থাকে।

বাস্তবতা হলো, এটি প্রসব-পরবর্তী অন্য সব সমস্যার মতোই একটি শারীরিক জটিলতা। চিকিৎসায় তা পুরোপুরি সেরে ওঠে।

বেবি-ব্লুজের লক্ষণ এবং উপসর্গ:

  • মুড সুইং, আতঙ্কিত থাকা, হতাশা, বিরক্তি, কান্নাকাটি, অমনোযোগী, ক্ষুধামান্দ্য, ঘুমে ব্যাঘাত।

পোস্টপারটাম ডিপ্রেশনের লক্ষণ এবং উপসর্গ:

  • মারাত্মক মুড সুইং, অতিরিক্ত কান্নাকাটি, সন্তানের সঙ্গে বন্ডিং না থাকা, পরিবার-পরিজন থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলা, ক্ষুধামান্দ্য অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া-দাওয়া করা, অনিদ্রা অথবা অতিরিক্ত ঘুম, সবকিছু থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
  • এ ছাড়া অতিরিক্ত রাগ এবং বিরক্তি, ভালো মা হতে না পারার ভয়, আশাহীন হয়ে পড়া, নিজেকে মূল্যহীন মনে করা, লজ্জা এবং ভয়ে কুঁকড়ে থাকা, মনোযোগ নষ্ট হয়ে যাওয়া, কল্পনাশক্তি কমে যাওয়া, সিদ্ধান্তহীনতা, অস্থিরতা, প্যানিকড হয়ে যাওয়া, সন্তান কিংবা নিজের ক্ষতি করার চিন্তা, বারবার আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা।

মারাত্মক পোস্টপারটাম সাইকোসিসের লক্ষণ ও উপসর্গ:

  • কনফিউশন এবং ডিসঅরিয়েনটেশন, সন্তান নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনা, হ্যালুসিনেশন এবং ডেলিউশন, অনিদ্রা, অতিরিক্ত রাগ , প্যারোনিয়া, সন্তান কিংবা নিজের ক্ষতি করা বা করার চেষ্টা।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?

  • যদি দুই সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে।
  • সন্তানের যত্ন নিতে না পারা কিংবা যত্ন নিতে বেশি কষ্ট লাগলে।
  • দৈনন্দিন কাজকর্ম ঠিকমতো করতে না পারলে।
  • নিজের কিংবা সন্তানের ক্ষতি করার চিন্তা মাথায় এলে।

শেষকথা

বিষণ্ণতায় ভোগা রোগীরা চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। যারা বিষণ্ণতায় ভুগছেন, তারা নিজেরা হয়তো বুঝতে পারেন না। তাই এগিয়ে আসতে হবে স্বামীকে, পরিবারকে। আপনার কাছের কেউ এমন সমস্যায় ভুগলে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। তাকে একজন মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।

এ বিভাগের আরো খবর