বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বই পড়লে চা ফ্রি

  •    
  • ২৭ মে, ২০২২ ২২:৪৬

বইপ্রেমীদের জন্য চা বানিয়ে নিয়ে আসেন লিপিকা লাইব্রেরি বিক্রয়কর্মী মো. রিফাত। জানালেন, আদা, তেজপাতা আর এলাচ দিয়ে তিনি চা বানান। বই হাতে নিয়ে কেউ বসলে একটু পর পরই চায়ের কাপ এগিয়ে দেন।

বইয়ের ছোট্ট একটা দোকান। সামনে কার্পেট বিছিয়ে কয়েকটা চেয়ার-টেবিল রাখা। তাতে বসে বই পড়ছেন কয়েকজন। সবার হাতে চায়ের ওয়ানটাইম কাপ। কেউ কেউ বই পড়ছেন আর প্রয়োজনীয় লাইনগুলো টুকে রাখছেন নোটবুকে। দেখে হঠাৎ করে লাইব্রেরিই মনে হবে।

দোকানের নামও লিপিকা লাইব্রেরি। কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়ে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার পাশে নুরজাহার ট্রেড সেন্টারের নিচতলায় এর অবস্থান।

কাউন্টারের ওপর রাখা নোটিশটিই এই দোকানের মূল আকর্ষণ। কারণ ওই নোটিশে লেখা, ‘আসুন, বসুন, চা খেতে খেতে বই পড়ুন। বসা ফ্রি, বই পড়া ফ্রি, চা খাওয়াও ফ্রি।’

বইপ্রেমীদের জন্য চা বানিয়ে নিয়ে আসেন লিপিকা লাইব্রেরি বিক্রয়কর্মী মো. রিফাত। জানালেন, আদা, তেজপাতা আর এলাচ দিয়ে তিনি চা বানান। বই হাতে নিয়ে কেউ বসলে একটু পর পরই চায়ের কাপ এগিয়ে দেন।

চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বই পড়ছিলেন আর নোট নিচ্ছিলেন উম্মে হাবিবা ফাইজা। কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির পড়েন তিনি। দুপুরে কলেজ শেষ। বিকেল তিনটায় কোচিং। এর মাঝে চট করে এই দোকানে এসেছেন তিনি। জানালেন এখানে নিয়মিতই আসেন।

ফাইজা বলেন, ‘কলেজ শেষ হওয়ার পর হাতে ঘণ্টা দেড়েক সময় থাকে। তখন লিপিকাতে আসি। বই নিয়ে পড়ি। নোট করি। দোকানের লোক চা দেয়। চা খাই আর নোট করি। চায়ের জন্য টাকা নেয় না।’

কলেজ শেষে লিপিকায় আসেন ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজের ছাত্রী রাবেয়া আক্তারও।

তিনি বলেন, ‘লাইব্রেরির মালিক আমাদের জন্য বই পড়া এবং চায়ের ব্যবস্থা করেছেন। খুব ভালো ব্যবহার তার। এখানে সরকারি লাইব্রেরির মতো বই পড়ার ব্যবস্থা আছে। বিষয়টা আমার কাছে নিরাপদ ও আনন্দের।’

এই দোকানের স্বত্বাধিকারী আরিফুর রহমান। নিউজবাংলাকে তিনি জানান, পড়ালেখা শেষ করে বইয়ের দোকান দেন। প্রথম দোকানটি ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়কের পূর্ব পাশে, সেটি এখনও আছে। নতুন এই দোকানটি চালু করেন সম্প্রতি।

চা খাওয়ানোর উদ্যোগ কেন?

আরিফুর বলেন, ‘আমি নতুন দোকানটা খোলার সময় চিন্তা করেছি বই বিক্রির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করা যায় কি না। সেই চিন্তা থেকে মনে হলো, দোকানের সামনে বসার ব্যবস্থা করব এবং যারা বই কিনতে আসবেন এবং আমাদের দোকানের সামনে বসে বই পড়বেন, তাদের জন্য চা পানের ব্যবস্থা করব। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী দোকান পরিচালনা শুরু করলাম।’

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বইপ্রেমী অন্যদেরও বেশ সাড়া পাচ্ছেন। দিনভর এমনকি সন্ধ্যায়ও লোকজন এসে চায়ের কাপ নিয়ে বই খুলে বসে যান।

আরিফুর বলেন, ‘আমি আগে শুধু ব্যবসায়ী ছিলাম। যারা আমার দোকানে আসতেন, তারা দর কষাকষি করে বই কিনে নিয়ে যেতেন। এখন আমি আমার ক্রেতাদের কাছে একজন ভাই ও বন্ধু।

‘এখন বই পড়ুয়াদের জন্য বসার ও চায়ের ব্যবস্থা করায় গ্রাহকরা আমার আপনজন হয়ে উঠেছেন। দোকানে আসার ও যাওয়ার সময় সালাম দেন। ভাইয়া কেমন আছেন- জিজ্ঞেস করেন। আমিও তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করি। চমৎকার একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এটা আমার খুব ভালো লাগে।’

এ বিভাগের আরো খবর