সৌদি আরবের সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামোয় চলছে বদলের ছোঁয়া। এমন সব পরিবর্তন দেশটিতে আজ বাস্তব, যা এক দশক আগেও কল্পনা করা যেত না। সৌদিতে এখন হচ্ছে ওপেন এয়ার কনসার্ট, সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে হলিউডের চলচ্চিত্র, নারীরা চালাচ্ছেন গাড়ি। আর এই পরিবর্তনের রূপকার হিসেবে বিবেচনা করা হয় সৌদি আরবের কার্যত শাসক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ বিন সালমানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কিং সালমান ফাউন্ডেশন বুধবার রিয়াদে রয়েল আর্ট (শিল্পকলা) কমপ্লেক্সের নির্মাণ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
কিং সালমান পার্কের অফিশিয়াল টুইটার পেজে এ-বিষয়ক একটি টুইট দেয়া হয়েছে।
পাঁচ লাখ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে থাকা এই কমপ্লেক্স কিং সালমান পার্ক প্রজেক্টের অংশ, ২০১৯-এর মার্চের ১৯ তারিখ সৌদি বাদশাহ সালমান এই প্রকল্প শুরু করেন। যার তত্ত্বাবধানে আছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
এই কমপ্লেক্সের মধ্যে থাকবে ১১০ মিটার উচ্চতার বিশ্ব সংস্কৃতির জাদুঘর, ২ হাজার ৩০০ আসনবিশিষ্ট ন্যাশনাল থিয়েটার। এ ছাড়া এই কমপ্লেক্স প্রকল্পে থাকবে রয়্যাল ইনস্টিটিউট অফ ট্র্যাডিশনাল আর্টস, যার মধ্যে থাকবে অ্যাকাডেমি অফ ট্র্যাডিশনাল ভিজুয়াল আর্টস, দ্য অ্যাকাডেমি অফ কালচারাল হেরিটেজ অ্যান্ড রিস্টোরেশন এবং অ্যাকাডেমি অফ থিয়েট্যারিক্যাল আর্টস।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান
এ ছাড়া কমপ্লেক্সে থাকবে একটি ভাস্কর্যের প্যাভিলিয়ন, দুটি থিয়েটার, তিনটি সিনেমা, শিল্প ও অন্যান্য সৃজনশীল কাজের জন্য দুইটি বড় হল এবং সংস্কৃতি ও শিল্পকলায় বিশেষ একটি লাইব্রেরি থাকবে, যেখানে ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বই থাকবে।
ফাউন্ডেশনটির দায়িত্বে রয়েছেন ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান। এই কমপ্লেক্সটিকে শিল্পকলার প্রধান আলোকবর্তিকা হিসেবে গড়ে তুলতে চাচ্ছেন তিনি। যেখানে আধুনিক ও ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ একসঙ্গে পাশাপাশিই থাকবে।
কিং সালমান পার্কটিকে সৌদি আরবের রাজধানীর প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে বিশ্বের বৃহত্তম পার্ক হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটিকে বলা হচ্ছে রিয়াদের ‘গ্রিন লাঙ’। এ পার্ক শহরের বাসিন্দাদের ও পার্কটিতে ভ্রমণকারীদের পরিবেশগত, সাংস্কৃতিক, শৈল্পিক ও বিনোদনমূলক অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করবে। বিশ্বের বাসযোগ্য শহরগুলোর তালিকায় রিয়াদকে এগিয়ে রাখতে এই পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পুরো প্রকল্পের পরিকল্পনায় ৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বৃত্তাকার পথচারীদের চলাচলের রাস্তা, ১১ বর্গকিলোমিটারের বেশি খোলা জায়গা ও প্রায় ১০ লাখ গাছ রয়েছে।