বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রেমে প্রতিদ্বন্দ্বী কি বন্ধু হতে পারে?  

  •    
  • ২২ মে, ২০২২ ১৭:৪৬

আমরা আমাদের প্রেমিক বা প্রেমিকাকে অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করতে চাই না, সেভাবেই আমাদের সামাজিক প্রশিক্ষণ ঘটেছে। কিন্তু সাইকোথেরাপিস্টরা বলছেন, আপনার সঙ্গী যদি একই সঙ্গে আরও কাউকে বেছে নিয়ে থাকেন, তাহলে ওই অপর ব্যক্তিটিকে বন্ধু ও মিত্র হয়ে হিসেবে বিবেচনা করাই শ্রেয়।

আপনি যার সঙ্গে প্রেম করছেন, তার যদি একই সঙ্গে আরেকটি সঙ্গী থাকে, সেই সঙ্গীকে আপনি শত্রু হিসেবে দেখবেন, এটাই স্বাভাবিক। দুনিয়ার সবাই সেভাবেই দেখে।

তবে সাইকোথেরাপিস্টরা বলছেন, সেই প্রতিদ্বন্দ্বীকে বন্ধু হিসেবে নিতে পারা যায়, নিতে পারাই ভালো। তারা ওই প্রতিদ্বন্দ্বী পুরুষ বা নারীটির (লাভারস লাভার) একটা নাম দিয়েছেন– ‘মেটামোর’। অর্থাৎ, মেটামোর হলো আপনার সঙ্গীর অপর সঙ্গী।

ব্রিটিশ সাইকোথেরাপিস্ট জায়না রাট্টি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রেমিক বা প্রেমিকাকে অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করতে চাই না, সেভাবেই আমাদের সামাজিক প্রশিক্ষণ ঘটেছে । কিন্তু এই মনোভাবকে চ্যালেঞ্জ করলে দেখা যাবে, আমরা রোমাঞ্চ এবং সম্ভাব্য আনন্দ দুটোই পাচ্ছি।’

দুই পক্ষের সম্মতিতে হওয়া প্রতিটা বহুগামী প্রেমের সম্পর্কের ধরন আলাদা। তাই সঙ্গীর সঙ্গী (লাভারস লাভার) লোকটির সঙ্গে আপনার সম্পর্কটাও ভিন্ন হতে পারে। তবে কেন কেউ তার সঙ্গীর সঙ্গীকে বন্ধু হিসেবে নিতে চাইবে?

ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী লরি বেথ বিসবে বলেন, যদি আপনার সঙ্গী তাকে পছন্দ করে থাকে, তবে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আপনার বন্ধুত্বের সম্ভাবনা আছে। কারণ আপনাদের মধ্যে অনেক কিছুতেই মিল, নাহলে আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী তাকে বেছে নিত না।

জায়না রাট্টি বলেন, আপনি যদি সম্মতির ভিত্তিতে আপনার প্রেমিক বা প্রেমিকাকে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজি হয়ে থাকেন, যেখানে কার আচরণ কেমন হবে, কে কতদূর যেতে পারবে, সেই সীমারেখা স্পষ্ট করে চিহ্নিত করা থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনি কিছু সুবিধাও পেতে পারেন। আপনার সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি হলে তখন আপনার ‘মেটামোর’ বা প্রতিদ্বন্দ্বী আপনাকে সান্ত্বনা বা পরামর্শ দিতে পারে।

কীভাবে আপনার প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতবেন?

বিসবে বলেন, ‘প্রথম যেটা করতে হবে তা হলো মনোগ্যামি হ্যাংওভার কাটানোর চেষ্টা করা। আপনার সঙ্গী অন্য কারও সঙ্গে ডেট করামাত্র সেই ব্যক্তিকে যে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচনা করেন, সেটাই মনোগ্যামি হ্যাংওভার। আপনার মেটামোর আপনার সঙ্গীকে নিয়ে ভেগে যাচ্ছে, এই ভাবনা ত্যাগ করে তাকে বরং আপনার বন্ধু, আপনার পরিবারের সদস্য, সাপোর্টার বা মিত্র হিসেবে বিবেচনা করতে শিখুন।’

একবার এটা করতে পারলে আপনাকে আর বিশেষ কিছুই করতে হবে না। আপনার মেটামোরের সঙ্গে আপনার স্বাভাবিক বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে দিন। এটা নিয়ে জোরাজুরি করার কোনো দরকার নেই। ভাবার দরকার নেই, যেহেতু আপনার সঙ্গী তাকে পছন্দ করছে, শুধু সে কারণেই তার সঙ্গে আগবাড়িয়ে বন্ধুত্ব পাতাতে হবে।

বিসবে বলেন, ‘এই সম্পর্কটা অন্যসব বন্ধুর থেকে আলাদা হবে না। আপনার মধ্যে যদি ঈর্ষা এবং নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে তবে তা-ই করুক।’

সাইকোথেরাপিস্ট জায়না রাট্টি বলেন, ‘আপনার যদি স্কুলে একাধিক বেস্টফ্রেন্ড থাকে, তবে আপনার সঙ্গীর সঙ্গীদের সঙ্গে বন্ধু হওয়ার জন্য আপনার কাছে ইতোমধ্যে মডেল রয়েছে। আপনাকে পারস্পরিক প্রেমের ধারণা থেকে সরে আসতে হবে। সম্পর্কের জটিল মানসিক জাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

আপনার সঙ্গীর বন্ধু সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট করুন। ঠিক করুন আপনি কী চান? জানার চেষ্টা করুন তারা কী চায়?

কিছু মানুষ তাদের প্রেমিকার প্রেমিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়। কিন্তু তাদের সঙ্গে অন্য সম্পর্কে জড়াতে চায় না। সঙ্গীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক চলাকালে কোনো জরুরি অবস্থায় সঙ্গীর বন্ধুকে ডাকা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনার মেটামোর আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

সঙ্গীর বন্ধু যদি বন্ধু হতে না চায়!

আপনার মেটামোর যদি আপনাকে বন্ধু হিসেবে নিতে রাজি না থাকেন, তবে তা মেনে নিন। কিছু মানুষ আছে যারা তাদের জীবনে একাধিক মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে একেবারেই আগ্রহী না।

বিসবে বলেন, ‘সম্মতি নিয়ে বহুগামী সম্পর্কের কিছু মানুষ একা সময় কাটাতে উপভোগ করে। এর মানে তারা তাদের সঙ্গীকে অন্য কারও সঙ্গে মেশাকে সহজভাবে নিয়েছেন। অন্যদিকে অন্যরা তাদের সঙ্গীর বন্ধুর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ হতে পারে; কিন্তু ঠিক বন্ধু হতে চায় না। এ ক্ষেত্রেও জোর করা উচিত না।’

সঙ্গীর বন্ধু যদি আপনার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে প্রস্তুত না হন কী করবেন?

আপনি যদি বন্ধুত্বের জন্য প্রস্তুত না হন, তবে সেটা খারাপ কিছু না।

বিসবে বলেন, ‘আপনার অনুভূতিগুলোকে ভালো করে বোঝান। ভবিষ্যতে কোনো সম্পর্কের সম্ভাবনা বন্ধ করবেন না। বিষয়গুলো এমনভাবে বলার চেষ্টা করুন, যেন সঙ্গীর বন্ধুর তা খারাপ না লাগে।

‘মন খোলা রাখুন। এমন না যে সঙ্গীর ভালোবাসার মানুষদের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব না-ও হতে পারে। তবে কোনো না কোনো দিন হতেও পারে। এ সবই বহুগামী এবং সম্মতিমূলক বহুগামী প্রেমের অংশ।’

এ বিভাগের আরো খবর