ডেডিকেটেড ফ্লাইট পেলে সব হজযাত্রীর বাংলাদেশ ও সৌদি আরব প্রান্তের ইমিগ্রেশন দেশের বিমানবন্দরে করা সম্ভব হবে। অন্যথায় ঢাকায় ইমিগ্রেশন সম্ভব হবে না। আর শিডিউল ফ্লাইটের যাত্রীদের সৌদি আরব প্রান্তের ইমিগ্রেশন সে দেশেই করতে হবে।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
হজযাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনায় ব্যবস্থা গ্রহণে এয়ারলাইনস ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হাবের সভাপতি।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের প্যাকেজ মূল্য তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে হাব।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য এবার শুধু একটি সাধারণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হাব। ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। এই প্যাকেজের বাইরে কোরবানির জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার সরকারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।
সংস্থাটির সভাপতি বলেন, ‘হজযাত্রায় হাজীদের জন্য একটি বিড়ম্বনার কারণ হয় ইমিগ্রেশন। আমরা অনেক চেষ্টায় কয়েক বছর ধরে ঢাকায় ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা করেছি। সেক্ষেত্রে সৌদি সরকারের শর্ত ছিল, শুধু হজের ডেডিকেটেড ফ্লাইটের যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ঢাকায় করা যাবে।
‘এয়ারলাইন্সগুলো হজযাত্রীদের ডেডিকেটেড ফ্লাইট না দিলে আমরা এই সুবিধা পাব না। তাই হাজিদের ভোগান্তি এড়াতে ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনার জন্য এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতি আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি। আর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ধর্ম ও বিমান মন্ত্রণালয়ের তদারকি প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ থেকে এবার ৬৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে কেউ হজে যেতে পারবেন না। একইসঙ্গে সবার করোনা টিকা-বুস্টার ডোজ ও করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে।
শাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘প্রত্যেক হাজীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিষেধক টিকা, বুস্টার ডোজসহ করোনা টিকা গ্রহন সনদ ও যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে করোনা নেগিটিভ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। করোনা আক্রান্ত কেউ হজে যেতে পারবেন না।’
করোনা সংক্রমণের কারণে কেউ হজে যেতে না পারলে তার জমা দেয়া অর্থ ফেরত দেয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
হাব সভাপতি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে কথা বলব, টিকিটের টাকাটা যেন অন্তত ফেরত দেয়া যায়। কারণ সৌদি আরবে বাসা ভাড়াসহ অন্যান্য খরচের টাকা সেদেশের সরকার ফেরত দেবে না।’
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য এবার শুধু একটি সাধারণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হাব। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। এ প্যাকেজের বাইরে কোরবানির জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার সরকারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।
শাহাদতা হোসাইন বলেন, ‘প্যাকেজের বাইরে হজযাত্রীদের কোরবানির টাকা গ্রহণের জন্য সৌদি সরকার মক্কায় বুথ স্থাপন করবে। টাকা জমার বিপরীতে বুথ থেকেই কোরবানির রশিদ সরবরাহ করা হবে।’
হাবের হজ প্যাকেজ
হাবের ঘোষণা করা প্যাকেজে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়া এক লাখ ৪০ হাজার টাকা, বাড়িভাড়া এক লাখ ৫৮ হাজার ৫৬ টাকা, সার্ভিস ও পরিবহন ব্যয় ৪২ হাজার ৬৩৫ টাকা।
এ ছাড়া জমজমের পানি ২৯২ টাকা, অন্যান্য সার্ভিস চার্জ ৬২ হাজার ২৩৬ টাকা, লাগেজ পরিবহন ৭২৯ টাকা, ভিসা ফি ৮ হাজার ৩৮৪ টাকা, ইন্স্যুরেন্স ২ হাজার ৬৭৩ টাকা, স্থানীয় সার্ভিস চার্জ এক হাজার টাকা।
আরও রয়েছে-ক্যাম্প তহবিল বাবদ ২০০, প্রশিক্ষণ ৩০০, খাওয়া বাবদ ৩২ হাজার, নিবন্ধন দুই হাজার, মোয়াজ্জেম খরচ চার হাজার ও হজ গাইড খরচ ১০ হাজার ২৩৮ টাকা।
কোরবানি দিতে আগ্রহী প্রত্যেক হজযাত্রীকে এর বাইরে ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা সঙ্গে নিতে হবে।
হাব সভাপতি বলেন, ‘প্যাকেজের টাকা চলতি মে মাসের ১৮ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হবে। টাকা জমা দিয়ে এজেন্সির ব্যাংক হিসাব অথবা টাকা জমা দেয়ার রসিদ নিতে হবে।’
এছাড়া হাজীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে৷ প্রথম হজ ফ্লাইট ৩১ মে পরিচালনার কথা থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে এর ব্যত্যয় হতে পারে বলেও জানান শাহাদাত হোসাইন তসলিম।