দাদা রবিউল আলমকে নিয়ে হাতিরঝিলে এসেছে সাত বছরের স্নিগ্ধা। অন্য শিশুদের সঙ্গে ছোটাছুটি করছে; একটু পরপর বায়না ধরছে বেলুন, খেলনা কিনে দেয়ার। এরপর বায়না ধরল ‘হাতিতে চড়বে’।
আসল হাতি না হলেও কৃত্রিম হাতির পিঠে চড়িয়ে দাদা নাতনির বায়না পূরণ করলেন।
ঈদের পরদিন বুধবার এই দাদা-নাতনির মতো শত শত শিশু-কিশোর ভিড় জমিয়েছে হাতিরঝিলে। একই রকম ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায়।
এসব জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, শিশু-কিশোরসহ সব ধরনের মানুষের ভিড়। কেউ খেলছে, কেউ ছবি তুলছে, কেউবা ছোটাছুটিতে ব্যস্ত।
ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকার বাইরে যাননি তাদের অনেকেই এসব জায়গায় ঘুরতে বের হয়েছেন। দুপুরের পর নগরীর হাতিরঝিলে ঘুরতে এসেছেন অনেকে।
হাতিরঝিলসহ নগরীর এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ। সব কটি এলাকাজুড়েই মানুষের ভিড়। দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরছেন অনেকেই। অনেকে দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
রাজধানীর অন্যতম একটি বিনোদনের জায়গা হাতিরঝিল। বিশেষ দিনগুলোয় মানুষের ভিড়ে যেন আরও বেশি জমজমাট হয়ে ওঠে।
পুলিশ প্লাজার পেছনে কৃত্রিমভাবে তৈরি হাতির ওপর চড়ে খেলছে শিশুরা। অনেকেই হাতির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে নিচ্ছেন। কেউবা টিকটক তৈরিতে ব্যস্ত। কেউ কেউ বাইক নিয়ে পুরো হাতিরঝিল মহড়া দিচ্ছেন।
হাতিরঝিলের রামপুরা অংশে সেতুর ওপর একদল কিশোরকে টিকটক তৈরি করতে দেখা গেল।
শুধু হাতিরঝিল নয়, চন্দ্রিমা উদ্যান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসিসহ ফাঁকা নেই কোথাও। আনন্দ আর উল্লাসে কাটছে সময়।
রমনা পার্কে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপচেপড়া ভিড়। কেউ দোলনায় দুলছেন, শিশুরা খেলছে, কেউবা রমনার সবুজ ঘাসের ওপর বসে গল্প করছেন।
এ সময় কথা হয় রবিউল আলমের সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নাতনির আগে থেকেই বায়না ঈদের ছুটিতে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। ওর বাবা-মা আসেনি। কি আর করা, আমাকেই নিতে আসতে হলো।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে শিশুদের তো আর খেলার কোনো জায়গা নেই। তবে এখন রমনা পার্কটি সুন্দর হয়েছে। শিশুদের খেলার জন্যও আলাদা জায়গা রয়েছে। এখানে এসে শিশুরা অনেক মজা পায়।’
রাজধানীর শনির আখড়া থেকে সপরিবারে এসেছেন রিয়াদ হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা দুপুরের আগেই এসেছি। বাসা থেকে রান্না করে খাবার নিয়ে এসেছি। সারা দিন রমনা পার্কে শিশুরা খেলছে। দুপুরে মাটিতে চাদর বিছিয়ে আমরা এখানে খাবার খেয়েছি। রমনা পার্কে এখন ঘুরে বেড়ানোর মতো পরিবেশ হয়েছে। খুবই ভালো লাগছে।’