ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার বিকেল থেকে যাত্রীর চাপ কম থাকলেও ইফতারের পর যাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকে। শেষ সময়ে এসে স্ট্যান্ডিং টিকিটের কদর বেড়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে।
সরেজমিনে দেখা গেল, সন্ধ্যার পর স্টেশনের বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে দেয়া হচ্ছে স্ট্যান্ডিং টিকিট। অবশ্য এর আগে কমলাপুর রেলস্টেশনে স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, এবার স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হবে না।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে দিনাজপুর যাবেন মঞ্জুরুল ইসলাম। ৫২০ টাকা করে ১০৪০ টাকা দিয়ে দুটি স্ট্যান্ডিং টিকিট কেনেন তিনি। নিউজবাংলাকে তিনি বললেন, ‘বাসে উঠলেই বমি বমি ভাব হয়। এজন্য বাসে ভ্রমণ করতে পারি না। এদিকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট পাইনি। গন্তব্য অনেক দূর। তারপরও বাধ্য হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিটই কাটলাম।’
কমলাপুর রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে বেশ কিছু যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। কাছে গিয়ে টিকিট পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে অনেকেই মন্তব্য করতে চাননি।
এই ট্রেনেই আগাম টিকিট পেয়েছেন তিতুমীর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী অমৃত। তিনি বলেন, ‘যারা দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন তাদের কেউ কেউ স্ট্যান্ডিং টিকিট করেছেন। আবার অনেকে টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ করছেন।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় যাবেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাহাবুব ও তার বন্ধু। তারা দুটি স্ট্যান্ডিং টিকিট করেছেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুটি টিকিটের জন্য ৬শ’ টাকা নেয়া হয়েছে। সে হিসাবে টিকিট প্রতি খরচ হয়েছে ৩শ’ টাকা।’
বগুড়া সান্তাহারে যাবেন আকাশ। একটি স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য তাকে গুনতে হয়েছে ৪১০ টাকা।
চিত্রা এক্সপ্রেসের খাবার গাড়ির দায়িত্বে থাকা আকাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যেতেই হবে। তাই অনেক দূরের যাত্রীরাও স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটছেন।’
ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক। তবে আমার নাম বলার ক্ষেত্রে বিভাগীয় নিষেধ আছে।’
এ বিষয়ে জানতে কমলাপুর রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে গত বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, এবার স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।
চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের ৫০ মিনিট পর কমলাপুর ছেড়ে যায়।
এবারের ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেনে রাজধানী ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেনে আসন রয়েছে ২৭ হাজারের বেশি।
ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে। এবারের ঈদযাত্রায় বেশিসংখ্যক যাত্রী বহনের সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।