বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মন খারাপের স্ট্যাটাসে শাস্তির কথা কোথাও নেই

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ২২:৫৫

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিধিমালা স্বচ্ছতার জন্য সবার মতামত নিতে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। এখন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। সবার মতামত নিয়ে করা হচ্ছে, যারা এর সমালোচনা করছেন তারা হয়ত না বুঝেই করছেন। যারা এমন কথা বলছেন, তাদের আরও বুঝেশুনে কথা বলা উচিত ছিল।’

আজ আমার মন খারাপ- এমন স্ট্যাটাস দিলে শাস্তি হতে পারে- একটি জাতীয় দৈনিকের এমন সংবাদ নিয়ে নেট দুনিয়ায় তোলপাড় হলেও, এমন কোনো কথা লেখা নেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা-বিটিআরসির খসড়া বিধিমালায়।

ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্লাটফর্মের জন্য এই খসড়া বিধিমালা বিটিআরসি করতে যাচ্ছে হাইকোর্টের আদেশে। আর সেটি এখন অনলাইনে উন্মুক্ত করে দিয়ে জনগণের মতামত নেয়া হচ্ছে।

এরই মধ্যে সাধারণের মতামত দেয়ার সময় শেষ হয়েছে। এখন বিশেষজ্ঞদের মত দেয়ার সময় চলছে। এই অবস্থায় শনিবার একটি ভার্চুয়াল আলোচনা হয়।

এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুল হক সুপন। তিনি বিধিমালা নিয়ে নিজের আপত্তি তুলে ধরে উদাহরণ আকারে বলেন, “এ বিধিমালা জারি হলে তা দেশের মানুষের মত প্রকাশের অধিকারকে ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন করবে। এমনকি কেউ যদি ফেসবুকে ‘আজ আমার মন খারাপ'-এ ধরনের স্ট্যাটাসও দেয়, তাহলে বিটিআরসি’র এই বিধিমালার আওতায় কর্তৃপক্ষ চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।”

দৈনিক সমকালের প্রথম পাতায় এই সংবাদটি আসে “বিটিআরসির নতুন বিধিমালা: ‘আজ আমার মন খারাপ’ স্ট্যাটাস দিলেও শাস্তি!” শিরোনামে।

রোববার দিনভর এই সংবাদটি ছিল আলোচনার তুঙ্গে।

বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদারের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তিনি নিশ্চিত করেছেন, তাদের খসড়ায় এমন কোনো কথার উল্লেখ নেই।

তিনি বলেন, ‘এ বিধিমালা স্বচ্ছতার জন্য সবার মতামত নিতে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। এখন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। সবার মতামত নিয়ে করা হচ্ছে, যারা এর সমালোচনা করছেন তারা হয়ত না বুঝেই করছেন।’

সেই খসড়া বিধিমালা ঘেঁটেও দেখেছে নিউজবাংলা। তাকেও এই ধরনের কোনো কথার উল্লেখ নেই।

খসড়াটি বিটিআরসির ওয়েবসাইটেই দেয়া আছে। ইংরেজিতে ১৬ পৃষ্ঠার এই খসড়াটি যে কেউ পড়তে পারবেন।

‘মন খারাপের স্ট্যাটাস দিলে শাস্তি হতে পারে’-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুপন কেন এমনটা ভাবছেন- সে বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। চারবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

শনিবারের সেই আলোচনায় আইনের শিক্ষক সুপন ছাড়াও ছিলেন আইনজীবী শাহদিন মালিক, সারা হোসেন এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক নূরাণ চৌধুরী।

শাহদিন মালিক বলেন, ‘যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করা হয়েছিল। কিন্তু বলা হয়েছিল সাইবার অপরাধ দমনের জন্য এটা করা হচ্ছে। পরে দেখা গেল- সাইবার অপরাধ দমন নয়, বরং সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার জন্যই হাতিয়ার হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আইনে যদি সবকিছু পরিষ্কার না থাকে, অনেক বেশি অস্পষ্টতা থাকে তাহলে সেটা অপব্যবহার সুযোগও সৃষ্টি হয় বেশি। এখন ডিজিটাল ও মিডিয়া ও ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য যে বিধিমালা করা হচ্ছে সেটার ভেতরেও একই ধরনের অবস্থা দেখা যাচ্ছে। এই বিধিমালা ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

তবে বিটিআরসির চেয়ার‌ম্যান বলেছেন, যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, সেটি করার জন্য এই বিধিমালা করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘যারা এমন কথা বলছেন, তাদের আরও বুঝেশুনে কথা বলা উচিত ছিল।’

বিধিটি আদালতের নির্দেশে করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনও তা খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। এটি চূড়ান্ত হতে আরও অনেক ধাপ পার হতে হবে। বিধিটি আরও বেশি স্বচ্ছ করতে সবার মতামত চাওয়া হয়েছিল, যাতে ‍গোপন কিছু না থাকে।’

সংশ্লিষ্টদের মতামতের উপর এর উপর ভিত্তি করে যদি কোনো সংশোধন আনতে হয় তাও করা হবে বলেও জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। বলেন, ‘এরপরই তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। আদলত সন্তুষ্ট হলেই এটি চূড়ান্ত হতে পারে। তার আগে নয়।’

তিনি বলেন, ‘এখানে মানুষের গোপনীয়তা লঙ্ঘন হবে, এমন কিছু থাকার সুযোগ নেই। বা ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। আর মানুষের অধিকার লঙ্ঘন হবে- এমন কোনো কিছু কি আদালত অনুমোদন দেবে?’

এ বিভাগের আরো খবর