ঢাকার গুলিস্তান থেকে ফ্লাইওভারে উঠলেই যানজটহীন পরিবেশে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে আপনি অল্প সময়ে চলে আসতে পারেন ঢালী’স আম্বার নিবাস রিসোর্টে। ১০০ বিঘার বেশি জমি নিয়ে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টের প্রাকৃতিক পরিবেশ আর দৃষ্টিনন্দন স্থাপনায় প্রবেশ করবেন অন্যরকম এক জগতে।
এখানে প্রাকৃতিকভাবেই শোনা যাবে বিভিন্ন পাখির কলতান। এমনকি মাঝেমধ্যে শুনতে পাবেন কোকিলের কুহু কুহু শব্দ আর বউ কথা কও পাখির মিষ্টি-মধুর ডাক। ঘন অরণ্যে ঘেরা এই রিসোর্ট ঢাকার অদূরে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের বাহেরকুচি, ইছাপুরা এলাকায় অবস্থিত।
এখানে আছে স্বচ্ছ পানির বিশাল সুইমিংপুল। সুন্দর পরিপাটি আর শৈল্পিক ছোঁয়ায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই রিসোর্টের প্রতিটি রাস্তা। এখানে রয়েছে নীলে কাঠের তৈরি পুল আর ঝুলন্ত সেতু। রয়েছে বিশাল লেক। মাছও চাষ হয় লেকে। শান বাঁধানো পুকুরঘাটে আছে নৌকা। যাতে চড়ে আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন অনায়াসে।
২৫০ টাকায় টিকিট কেটে আপনি উপভোগ করতে পারেন এই রিসোর্টের সৌন্দর্য। চাইলে রিসোর্টে থাকা ৯৯টি কক্ষের মধ্যে রাত কাটাতে পারবেন। এখানে প্রতিটি কক্ষের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৮ হাজার থেকে ৪৫ হাজার ৯৯০ টাকা।
বিশাল আয়তনের এই রিসোর্টটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। রিসোর্টের ভেতর এখনও অনেক স্থাপনা নির্মাণকাজ চলেছে। তবে প্রকৃতিপ্রেমীদের কমতি নেই রিসোর্টে।
রিসোর্টে ঘুরতে আসা রাফি সাহেবের পরিবার দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমবার পরিবারের সঙ্গে এখানে ঘুরতে এসেছি। এখানকার সুইমিংপুলটা অনেক বড় এবং সুন্দর। গোসল করে মজা পেয়েছি।’
ঘুরতে আসা মাহি বলেন, ‘অনলাইনে দেখে এখানে এসেছি। বাংলাদেশের মধ্যে এত সুন্দর জায়াগা আছে, এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। এখানে এসে ঘুরছি, ভালো লাগছে।’
ঢালী’স আম্বার নিবাস রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করি মানুষ যাতে এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। পরিবার নিয়ে ঘোরার মতো একটাই রিসোর্ট বাংলাদেশে, সেটা ঢালী’স আম্বার নিবাস।’
এখানে কনভেনশন সেন্টার বানানো হচ্ছে। সেখানে একসঙ্গে ছয় হাজার লোক বসতে পারবেন। তিন হাজার গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা হচ্ছে। ১০০ বাস এখানে একসঙ্গে রাখা যাবে।
এখানে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজের আওতায় অতিথিরা আসতে পারেন। দিনব্যাপী অবস্থানের জন্য রয়েছে ডে লং প্যাকেজ। যেখানে থাকছে এন্ট্রি, সুইমিংপুল ও বাফেট লাঞ্চ। এ জন্য গুনতে হবে জনপ্রতি ১ হাজার ৮৫০ টাকা।
উইন্টার স্পেশাল প্যাকেজে থাকছে বাফেট ব্রেকফাস্ট, বাফেট লাঞ্চ ও ইভনিং স্ন্যাকস। এ জন্য গুনতে হবে জনপ্রতি ২ হাজার ৩৫০ টাকা। সুইমিংপুল ইনক্লুড করতে চাইলে ১০০ টাকা ছাড় পাওয়া যাবে। সুইমিং সুপার ডিল অফারে মাত্র ৮০০ টাকায় ব্যবহার করা যাবে সুইমিংপুল।
নাইট স্টে প্যাকেজে থাকছে এন্ট্রি, পার্কিং, সুইমিংপুল, মর্নিং ব্রেকফাস্ট, ওয়াই-ফাই এবং রুম সার্ভিস। এই রিসোর্টে রয়েছে মোট ৯৯টি কক্ষ। এর যেকোনো কক্ষে রাত যাপন করা যায়।
বিভিন্ন কক্ষের প্রতি রাতে ভাড়া
১. কটেজ : প্রতি রাত ৮ হাজার টাকা। কক্ষ ৪টি।
২. ডিলাক্স : প্রতি রাত ১০ হাজার টাকা। কক্ষ ২০টি।
৩. সুপার ডিলাক্স : প্রতি রাত ১২ হাজার টাকা। কক্ষ ২০টি।
৪. ঢালী’স এক্সক্লুসিভ : প্রতি রাত ১৪ হাজার। কক্ষ ২০টি।
৫. ফ্যামিলি কটেজ : প্রতি রাত ২৪ হাজার টাকা। তবে যদি ওই কটেজের একটি রুম নিতে চান, সে ক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ৮ হাজার টাকা।
৬. ওয়াটার লিলি সুপ্রিম : প্রতি রাত ১২ হাজার টাকা। কক্ষ ৫টি।
৭. ওয়াটার লিলি প্রিমিয়াম : প্রতি রাত ১৬ হাজার টাকা। কক্ষ ২টি।
৮. ওয়াটার লিলি সুইট : প্রতি রাত ২২ হাজার টাকা। কক্ষ ২টি।
৯. লুটাস : প্রতি রাত ১৬ হাজার টাকা। কক্ষ ৮টি।
১০. ডান অ্যাপার্টমেন্ট : প্রতি রাত ৪৫ হাজার ৯৯০ টাকা। কক্ষ ১টি।
১১. লেইক ভিউ : প্রতি রাত ১৬ হাজার টাকা। কক্ষ ৮টি।
১২. ফিল্ড ভিউ : প্রতি রাত ১২ হাজার টাকা। কক্ষ ৬টি।
এখানে রয়েছে কায়াকিং, ট্রি হাউস, রেস্তোরাঁ, কিডস জোন, ললে, পিকনিক, হেলিপ্যাড, খেলার মাঠ, ক্যান্টিন ইত্যাদি।
যেভাবে যাবেন...
গুলিস্তান থেকে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলী নেমে কিংবা শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে নেমে সিএনজি করে বাহেরকচি নামলেই পেয়ে যাবেন ঢালী’স আম্বার নিবাস।