যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ছোট্ট শহর ভেনচুরা। কয়েক বছর ধরে সেখানে ঘটছে অদ্ভুত তামাশা (প্র্যাঙ্ক)। নাম-ঠিকানা গোপন রেখে কে বা কারা যেন বাড়ি বাড়ি পাঠাচ্ছেন বিশেষ এক ‘উপহার’।
অনেকে বিষয়টিকে নিচ্ছেন স্বাভাবিকভাবে, কেউ ভেঙে পড়ছেন হাসিতে। তবে কেউ কেউ ভুগছেন প্রবল অস্বস্তিতে।
এই ‘উপহার’ পার্সেলে পৌঁছে দিতে কাজ করছে এমন এক প্রতিষ্ঠান, যার নামধাম উপহারের সঙ্গে বেশ মানানসই। প্রেরকের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফলে নির্বিবাদে এসব উপহার পাঠাতে পারছে প্রেরক।
তবে এবার ঘটছে বড় ধরনের বিপত্তি। লিন্ডা পার্ক নামে এক নারী রীতিমতো মামলা ঠুকেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
পার্কের রেগে যাওয়াই স্বাভাবিক। কারণ উপহার হিসেবে তিনি পেয়েছেন পুরুষাঙ্গের আদলে মোটামুটি বড়সড় এক চকলেট! ঘরের দোরগোড়ায় এমন উপহারের পার্সেল পেয়ে থ বনে গেছেন এই নারী, বিস্ময় কেটে যেতেই তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ-অপমানবোধ।
আত্মসম্মানে ঘা লাগায় পার্সেল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন তিনি।
কোর্টহাউস নিউজের প্রতিবেদন বলছে, গত মঙ্গলবার লিন্ডা পার্ক মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, রেইন প্যারেড এলএলসি-এর মালিকানাধীন ‘ডিক অ্যাট ইওর ডোর’ নামে একটি ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান তাকে চকলেটের পুরুষাঙ্গ পৌঁছে দিয়েছে। এই পার্সেল তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি যৌনতা বিষয়ক আরও অনেক সামগ্রী ডেলিভারি দিয়ে থাকে, যেগুলো মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলে।
অভিযোগে দাবি করা হয়, পাঁচ ইঞ্চি লম্বা এই চকলেট সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই উপহারপ্রাপ্তির ফলে তৈরি হওয়া মানসিক আঘাতের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ভেনচুরা কাউন্টির প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব পার্ক। কাউন্টির সুপারভাইজার, পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গেও তিনি জড়িত।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম ভিসিআররিপোর্টার এর প্রতিবেদন বলছে, উপহার পার্সেলটি গত বছর পান পার্ক। সে সময়ে করোনা ইস্যুতে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় চাপে ছিলেন তিনি। যদিও সবকিছু সামলে নিয়েছিলেন পার্ক।
সে সময় ভিসিআররিপোর্টারকে পার্ক বলেছিলেন, ‘শহরে নোংরা রাজনীতি চলছে। একটি বাক্সের ওপর নোটে লেখা, “আগেভাগে অবসর উপভোগ করুন... আপনার এটা প্রাপ্য।”'
দ্য ডিক অ্যাট ইওর ডোর নীতিমালায় রয়েছে, পার্সেলে বে-আইনি কিছু না থাকলে অথবা প্রেরকের বিরুদ্ধে (নিপীড়ন, যৌন হয়রানি) কোনো মামলা না থাকলে প্রতিষ্ঠান তার পরিচয় গোপন রাখবে।
ডিক অ্যাট ইওর ডোরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগেও উঠেছে। ২০১৬ সালে ডালাসভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালকের কাছে তারা ব্যাগভর্তি পুরুষাঙ্গের আদলে তৈরি চকলেট পাঠিয়েছিল। এরপর তিনি প্রেরকের নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর প্রকাশের দাবি তুলে আদালতে মামলা করেন।
তবে এমন উপহারে সবাই যে বিরক্ত হন, তা কিন্তু না। মিনেসোটা সিটি কাউন্সিলের সদস্য ডিক ভিটেলি গত বছর এমন উপহার পেয়ে ভীষণ মজা পেয়েছিলেন। এটাবাগোঅফডিকস ডট কম (EataBagofDicks.com) নামে একটি অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান তাকে এই উপহার পাঠিয়েছিল। পরে কাউন্সিল মিটিংয়ে বিষয়টি জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘এগুলো অবশ্যই উপভোগ করব…।’