বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লং কোভিড চিকিৎসায় ‘অতুলনীয়’ গাঁজা

  •    
  • ১৪ মার্চ, ২০২২ ১৫:০০

যুক্তরাজ্যে সরকারিভাবে লং কোভিডের জটিলতায় ভোগা রোগীদের চিকিৎসায় গাঁজা ব্যবহারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেখানে ওষুধ পরামর্শক কমিটিসংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থা ড্রাগ সায়েন্সের করা গবেষণাটি ছয় মাস চলবে এবং ৩০ জন রোগীর ওপর এ পরীক্ষা চালানো হবে। পরে বাড়ানো হবে ট্রায়ালের আওতা।

কোভিড-পরবর্তী দীর্ঘ জটিলতা বা লং কোভিডে আক্রান্তদের চিকিৎসায় গাঁজার ব্যবহার নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা। বেশকিছু পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলও মিলেছে। এই চিকিৎসাগ্রহণকারীরা বলছেন, তারা হতাশাপূর্ণ শারীরিক জটিলতা কাটিয়ে নতুন জীবনের দিশা পেয়েছেন। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এ প্রকাশিত নিবন্ধ অবলম্বনে লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার।

কোভিড-পরবর্তী জটিলতায় প্রায় এক বছর মারাত্মক ভুগেছেন অ্যান্ড্রু ভাস। অবশেষে চিকিৎসকের পরামর্শে গাঁজার দ্বারস্থ হন তিনি। নির্দিষ্ট করে বললে ঔষধি গাঁজার ৫ শতাংশ ক্যানাবিডিওল (সিবিডি) ও ০.২ শতাংশ টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনোল (টিএইচসি) তাকে দেয়া হয়। এই ওষুধের সুফল ছিল তাৎক্ষণিক।

লন্ডনের ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে কাজ করেন ৪২ বছরের ভাস। এর আগে জীবনে মাত্র দুবার গাঁজা সেবন করেছেন। দুবারই তার প্রচণ্ড মাইগ্রেনের ব্যথা হয়েছিল। ফলে পথ্য হিসেবে এবার গাঁজার দাওয়াই পেয়ে শুরুতে সন্দিহান ছিলেন ভাস। তবে জটিলতা এড়াতে আর উপায়ও ছিল না।

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইসকে ভাস বলেন, ‘আমার কোনো প্রত্যাশা ছিল না। কারণ একে আমি কখনও কোনো পথ্য বলে ভাবতাম না। ডাক্তারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি। তৃতীয়বার আলোচনার পর আমি রাজি হই।’

চিকিৎসকের পরামর্শে গাঁজা সেবনের পর বিষয়টি নিয়ে ধারণা পালটে গেছে ভাসের।

তিনি বলছিলেন, ‘কোভিডে আমি বেশ জটিলতার মুখোমুখি হই। যা করতে চাইছিলাম, একদম পারছিলাম না। তবে গাঁজা সেবনের পর থেকে সমস্যাগুলো কেটে গেছে। আমি এখন শারীরিক জটিলতাগুলোকে পেছনে ফেলতে পারছি।’

কোভিড-পরবর্তী জটিলতা ও প্রভাবের চিকিৎসার জন্য ঔষধি গাঁজার কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রাথমিক একটি ট্রায়ালে অংশ নেয়া মানুষদের একজন ভাস। এটি করোনাভাইরাসের ওপর গাঁজার প্রভাব বোঝার জন্য চলমান গবেষণাগুলোর একটি।

কোটি কোটি কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে দীর্ঘ কোভিডে (লং কোভিড) ভোগেন প্রায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ। এর উপসর্গের মধ্যে আছে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, পেশি দুর্বলতা, জ্বর ও জ্ঞানীয় কর্মহীনতা বা ‘মস্তিষ্কের অস্পষ্টতা’। এর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। কারও মধ্যে ১২ সপ্তাহের বেশি এ উপসর্গগুলো থাকলে তাকে কোভিডের ‘দীর্ঘ বাহক’ বলা হয়।

লং কোভিডের জটিলতা দূর করতে ব্যবহৃত হচ্ছে গাঁজার তেল

২০২০ সালের মার্চে ভাস কোভিডে আক্রান্ত হন। এক মাস পর তিনি লক্ষ করেন, তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আগে তিনি রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতেন, সেটি কমে দুই ঘণ্টায় নেমে আসে। এরপর তার অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও হাঁপানির আক্রমণ শুরু হয়।

সেপ্টেম্বরের পর তার পেশির ব্যথা শুরু হয়। পেশি হঠাৎ করেই সংকুচিত ও প্রসারিত হওয়া শুরু করে। ওই মাসেই তিনি প্রথমবারের মতো কোভিড-পরবর্তী অবসাদ ও ক্লান্তিতে পড়েন।

ভাস বলেন, ‘কোভিডের আগে আমি বেশ কর্মক্ষম ব্যক্তি ছিলাম। প্রচুর ফিটনেস ক্লাস ও এ রকম অনেক কিছুতে অংশ নিয়েছি। কোভিডের পর প্রতি রোববার আমি খুব সাধারণ একটা ব্যায়াম করার সিদ্ধান্ত নিই, কারণ অনেক দিন ধরে কোনো ব্যায়াম করিনি।

‘পরদিন বিছানা ছেড়ে উঠতেই আমার সমস্যা হচ্ছিল। পা মনে হচ্ছিল কনক্রিটের তৈরি। বিছানা থেকে গোসলখানা মাত্র ৪ মিটার দূরে। আমি সেটুকুও যেতে পারছিলাম না। কোনোমতে গোসলখানায় ঢুকে ঝরনার নিচের বসে ছিলাম। ছয় দিন বাসা থেকে বের হইনি। এরপর একরকম জোর করে বের হয়েছি।’

এ লক্ষণগুলো ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। যুক্তরাজ্যের এক চিকিৎসক ভাসকে অনিদ্রার চিকিৎসা হিসেবে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট অ্যামিট্রিপটাইলাইন খেতে বলেন। এটি কাজ করছিল। তবে দীর্ঘমেয়াদে সিন্থেটিক ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ ব্যবহার করার ব্যাপারে অনাগ্রহী ছিলেন ভাস। পরে অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক অঞ্জলি দিদি তাকে গাঁজা চিকিৎসার প্রস্তাব দেন।

এখন প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার ০.১ মিলিলিটারের গাঁজার তেল একটা সিরিঞ্জে নেন ভাস। তারপর তেলটি জিহ্বার নিচে রাখেন। এটা নেয়ার আধঘণ্টার মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।

ভাস বলেন, ‘এটা ছাড়া আমি আর কোনো ওষুধ নিই না। শুধু রিফ্লাক্সের জন্য একটা ওষুধ খেতে হয়।’

আপাতত এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে চান ভাস।

যুক্তরাজ্যের এনএইচএস রিসার্চ ইথিকস কমিটি ও মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি সংস্থা গত মাসের শুরুতে ঘোষণা দেয়, লং কোভিডের জটিলতায় ভোগা রোগীদের চিকিৎসায় তারা গাঁজার ব্যবহার করতে যাচ্ছে। ওষুধ পরামর্শক কমিটিসংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থা ড্রাগ সায়েন্সের করা গবেষণাটি ছয় মাস চলবে এবং ৩০ জন রোগীর ওপর এ পরীক্ষা চালানো হবে।

ট্রায়ালে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে একটি নন-সাইকোঅ্যাকটিভ গাঁজা তেলের ওষুধের দৈনিক ডোজ নির্ধারণ করে দেয়া হবে, যা মেডিকাবিলিস নামে পরিচিত। এটি তৈরি করেছে বিওডি অস্ট্রেলিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান, তারা এ গবেষণাটিও পরিচালনা করছে। অংশগ্রহণকারীদের প্রতিদিন নিজেদের অবস্থা জানাতে হবে, স্বীকৃত দীর্ঘ কোভিড উপসর্গগুলোর মূল্যায়ন করতে হবে। আর চিকিৎসার কার্যকারিতা নির্ধারণে গবেষকরা সেসব ডেটা বিশ্লেষণ করবেন। ফল সন্তোষজনক হলে গবেষণাকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে একটি বড় আকারের ট্রায়ালে পরিণত করা হবে। এই ট্রায়ালে যুক্তরাজ্যের অনেক রোগীকে যুক্ত করা হবে।

ড্রাগ সায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ডেভিড ব্যাডকক বলেন, ‘লং কোভিড নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে এবং সেটা খুব দ্রুত করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতিটি বের করতে পারব। এতে গাঁজার মতো ওষুধগুলোর কার্যকারিতাও পর্যালোচনা করা হবে। যুক্তরাজ্যে ২০১৯ সাল থেকে গাঁজা বৈধ। এর সম্বন্ধে এখনও মানুষের পরিষ্কার ধারণা নেই এবং চিকিৎসকেরা এটি খুব বেশি ব্যবহারের পরামর্শ দেন না।’

গত বছরের এপ্রিলে বায়োমলিকিউলার স্ট্রাকচার অ্যান্ড ডাইনামিকস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, গাঁজায় থাকা ক্যানাবিনয়েড (সিবিডি) ও ক্যানাবিভারিন (সিভিএন) কোভিড-পরবর্তী জটিলতার চিকিৎসার অংশ হতে পারে। এর পরই বিজ্ঞানীরা গাঁজাকে কোভিড-পরবর্তী চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ অরেগনইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর দুটি গবেষণায় দেখা যায়, গাঁজায় বিদ্যমান অ্যাসিড মানবদেহে কোভিড বা সার্স কোভ টু রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসের সংক্রমণে বাধা দিতে পারে। তবে পরীক্ষা দুটির কোনোটি মানুষের ওপর করা হয়নি।

অবশ্য এর মানে আবার এটা নয় যে গাঁজা খেলেই কেউ কোভিড থেকে সেরে উঠবেন বা তার কোভিড হবে না। গত বছরের জুনে বিজ্ঞানভিত্তিক পত্রিকা সাইকোলজি টুডেতে প্রকাশিত এক গবেষণায় লেখা হয়েছে, ‘ক্যানাবিনয়েডগুলোর কার্যকারিতা প্রমাণের জন্য আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন।’

মেডিকাবিলিসের পাশাপাশি গাঁজাভিত্তিক আরও কিছু ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে।

গত বছরের নভেম্বরে ব্রাজিলের সাও পাওলো ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল স্কুলের হার্ট ইনস্টিটিউট, ইনকোর ঘোষণা দেয়, তারা গাঁজা কোম্পানি ভার্ডেমেড উৎপাদিত একটি ফার্মাসিউটিক্যাল-গ্রেড সিবিডি নির্যাস ব্যবহার করে লং কোভিডের চিকিৎসার গবেষণা পরিচালনা করবে।

ব্রাজিলের গবেষকরা দেখার চেষ্টা করছেন, দীর্ঘদিন ধরে কোভিডে আক্রান্তদের জীবনমানে গাঁজার তৈরি ওষুধটি উন্নতি ঘটাতে পারে কি না। আগামী এপ্রিলের মধ্যে তারা একটি উত্তর পেয়ে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গবেষণা দলটির প্রধান এদিমার বোক্কি ল্যাটিন অ্যামেরিকান বিজনেস স্টোরিজকে বলেন, ‘মহামারিসংক্রান্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তাব করা হয়েছে, লং কোভিড উপসর্গগুলো পরবর্তী জনস্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটাতে যাচ্ছে। আমাদের গবেষণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে আগে কখনোই সিবিডির কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হয়নি।’

ইংল্যান্ডের শেফিল্ডের নিউরোহ্যাবিলিটেশন কনসালটেন্ট এলিজাবেথ আইভসনও বোক্কির সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, ‘লং কোভিডের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে ভুগতে থাকা অনেক রোগী এখন দেখা যাচ্ছে।’

এদের অনেকেই তরুণ, আগে সুস্থ-সবল এবং ভাসের মতো সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। এখন তাদের হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়, দুর্বলতা ও উদ্বেগে ভোগেন। আইভসনের মতে, লং কোভিডের চিকিৎসায় গাঁজার প্রভাব নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে আরও ট্রায়াল করা প্রয়োজন।

আইভসন বলেন, ‘গাঁজা সেবনের পরামর্শ ও বিভিন্ন উপসর্গের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, লং কোভিড রোগীদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে ঔষধি গাঁজা কার্যকর হতে পারে। তবে এখনও এসব ওষুধের জোগান খুব সীমিত ও খরুচে।’

আইভসন লং কোভিডের মতো উপসর্গে ভুগতে থাকা রোগীর ওপর ঔষধি গাঁজার প্রভাব নিজেই দেখেছেন। যুক্তরাজ্যে তার প্রথম গাঁজা চিকিৎসার রোগী কাইল এসপ্লিন। তিনি অবশ্য কোভিড নয়, অন্য ক্রনিক ডিজিজে ভুগছিলেন।

স্কটল্যান্ডের শহর ফোরফারের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী এসপ্লিন বলেন, ‘স্পেনের মায়োরকায় আমার একটি বাড়ি ছিল। পুরো বিশ্বে আমি ঘুরে বেড়াতাম এবং বিভিন্ন ক্রুজ শিপে শো করতাম। আমার জীবন চমৎকার ছিল।’

এরপর ২০১২ সালে তার শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাল ইনফেকশন হয়। ছয় মাসের মধ্যে অবস্থা এত খারাপ হয়ে যায় যে তিনি বিছানায় পড়ে যান। পোস্ট-এক্সারশনাল ম্যালাইস নামের জটিলতায় পড়েন এসপ্লিন, যেটি প্রচণ্ড শ্রান্তির জন্ম দেয়।

তিনি বলেন, ‘এ থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়া খুব কঠিন। চিকিৎসকদের কাছে এর কোনো প্রতিকার ছিল না। গাঁজার তেল গ্রহণ না করলে আমার মনে হয় না আমি আবার আগের শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা ফিরে পেতাম।’

ভাসের মতো এসপ্লিনও একাধিক চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করেও কোনো সুফল পাননি। শেষ পর্যন্ত ঔষধি গাঁজা গ্রহণ শুরুর পর তিনিও এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকারিতা দেখতে পান।

এসপ্লিন বলেন, ‘সব উপসর্গ কমিয়ে এনেছিল গাঁজা চিকিৎসা। দুই মিনিট হাঁটার পর আমি আর পড়ে যাচ্ছিলাম না। কিছুটা শক্তিও পাচ্ছিলাম।’

লং কোভিডের প্রভাব হিসেবে অবসাদ ও অন্যান্য জটিলতার সাধারণ একটি নাম ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম (সিএফএস)। এ ক্ষেত্রে সিবিডি তেলের কার্যকারিতা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা না হলেও দেখা গেছে, এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে গাঁজার সাফল্য রয়েছে।

২০১৬ সালের এক গবেষণায় এটা দেখা গেছে, গাঁজানির্ভর চিকিৎসা মাইগ্রেন ও ফাইব্রোমায়ালজিয়ার (পেশির ব্যথা ও অবসাদজনিত রোগ) ক্ষেত্রে কার্যকর। ২০১৭ সালে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, সিবিডি অতিসংবেদনশীল স্নায়ু ব্যবস্থাপনার চিকিৎসায় সহায়তা করে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, পেশির দুর্বলতা ও শারীরিক দুর্বলতার অন্যতম কারণ মাইটোকনড্রিয়াল ডিসফাংশন ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে এটি দূর করতে সক্ষম। ২০০৯ সালে করা একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, সিবিডি নানা ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ও শরীরে হোমিওস্ট্যাসিস বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

এপস্লিন এখন প্রতিদিন ঔষধি গাঁজা গ্রহণ করেন ও বাকি জীবন চালিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, ‘গাঁজাকে ওষুধ হিসেবে নেয়ার পর আমি কখনও অসুস্থ হইনি। এমনকি ফ্লু বা ঠান্ডাও লাগেনি।’

এ চিকিৎসার প্রভাব জীবনে কীভাবে পড়েছে তা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এপস্লিন।

ধরা গলায় বলেন, ‘ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমি ভাবতেও পারি না এ ওষুধ ছাড়া আমার জীবন কেমন হতো। যতটা সুস্থ হয়েছি এতটা হতে পারতাম না। জীবনে যা করতে ভালোবাসি ও উপভোগ করি সেগুলো করতে পারতাম না। আমি খুবই ভাগ্যবান এখন সেগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ করতে পারছি।’

অন্যদিকে ভাস বলেন, ‘লং কোভিডের বিষয়টি আগে কেউ শোনেননি। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হলো, চিকিৎসকদের এটা বিশ্বাস করাতেই কষ্ট হতো। তবে এখন লং কোভিডের বিষয়টি স্বীকার করা হচ্ছে।

‘গাঁজার ব্যবহার শারীরিকভাবে শুধু নয়, মানসিক দিক থেকে আমার নিজেকে পুনরায় গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।’

ভাস বলেন, ‘এটা সত্যিকারভাবেই আমার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। আগে যেমন ছিল তার পুরোটা হয়তো নয়, তবে ৯০-৯৫ শতাংশ। অন্যদের ক্ষেত্রেও যদি একই ধরনের ফল আসে তাহলে আমার মতে সেটা হবে অসাধারণ।’

এ বিভাগের আরো খবর