বিরক্ত করলে তো কথাই নেই, অনেক সময় বিরক্ত করা ছাড়াই মৌমাছি এবং বোলতার কাছে আমাদের নাজেহাল হতে হয়। ভয় পেলে হুল ফুটিয়ে এলাকা ছাড়া করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হুল ফোটানো বিপজ্জনক না-হলেও কারও যদি এলার্জি থাকে তাহলে ক্ষতিকর হতে পারে। বড়দের তুলনায় শিশুদের মৌমাছি বা বোলতা হুলে প্রতিক্রিয়া হয় বেশি।
এই সময় পত্রিকার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মৌমাছি কিংবা বোলতা হুল ফোটালে কী করতে হবে। চলুন জেনে নেই।
.
১. মৌমাছি বা বোলতা হুল ফুটিয়ে চামড়ার ওপর বসে থাকলে তা তুলে ফেলুন। এরা সাধারণত ত্বকের সঙ্গে একই সমতলে আঁকড়ে ধরে থাকে। তাই সরানোর জন্য ধীরে ধীরে এদের ওপরে এবং পাশে আঙুল বোলান, তারপর আচমকা ঠেলে ফেলে দিন।
.
২. খামচে বা চিমটি কেটে মৌমাছি অথবা বোলতাকে তোলার চেষ্টা করবেন না। কারণ এর ফলে বিষের থলি থেকে সব বিষ বেরিয়ে পড়বে এবং হুলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করবে।
.
৩. হুল ফোটানোর পর আক্রান্ত স্থানটিতে বরফ ডলুন। কিছুক্ষণ পর সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম লাগান। ক্রিম লাগানোর পাশাপাশি অ্যান্টি হিস্টামিন ওষুধ খান। ব্যথা বেশি হলে খেতে পারেন প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ।
৪. হুল ফোটানোর কারণে মাথাব্যথা, বমি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অন্যদিকে আক্রান্ত স্থানে চুলকাতে পারে, চাকা হয়ে ফুলে যেতেও পারে। এমনকি শরীর ফুলে যাওয়া ও পেটে তীব্র ব্যথা হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
.
এ ছাড়া কিছু ঘরোয়া উপায় আছে, যাতে উপসর্গগুলো কমে যেতে পারে। যাঁদের অবস্থা গুরুতর নয় এবং ওষুধ খেতে চাইছেন না, তাঁরা এই উপায় অবলম্বনে স্বস্তি পেতে পারেন।
.
১. বোলতা হুল ফোটালে আক্করান্য়েত স্থানে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল লাগিয়ে নিলে জ্বালা কমবে। মৌমাছি হুল ফোটালে তুলসীপাতার রস, ইউক্যালিপটাস তেল লাগালে স্বস্তি পাবেন। আবার অ্যালোভেরা জেলও শীতলতা প্রদান করতে পারে। অ্যালোভেরায় উপস্থিত অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ব্যথা, চুলকানি, ফোলা ও জ্বালা ভাব কম করে।
.
২. বেকিং সোডা ও অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তারপর ওই পেস্টটি আক্রান্ত স্থানে লাগান। বেকিং সোডা না থাকলে শুধু অ্যাপেল সিডার ভিনিগার লাগাতে পারেন। এই ভিনিগার বিষের অ্যাসিড নিষ্ক্রিয় করার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তুলায় ভিজিয়ে এই ভিনিগার ক্ষত স্থানে লাগাতে পারেন।
.
৩. মৌমাছি হুল ফোটালে ওই জায়গায় মধু লাগান। মধু বিষকে তরল করে দেয়। মধুতে উপস্থিত অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান সংক্রমণের ঝুঁকি কম করে। সামান্য মধু লাগিয়ে তা শুকাতে দিন। তারপর কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। হলুদ ও মধু একসঙ্গে মিশিয়েও লাগানো যেতে পারে।
.
৪. চন্দন ও হলুদ গুঁড়াও মৌমাছি এবং বোলতার হুল ফোটানোর কার্যকর উপায়। চন্দন জ্বালাভাব দূর করে, আবার হলুদ চুলকানো ও ফোলা ভাব কমায়। চন্দন ও হলুদের পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।